কথায় বলে, সুস্বাদু খাবার মন জেতার চাবিকাঠি। দারুন সত্যি কথা! এই বাংলা ভূখণ্ডে কত জাতি রাজত্ব করেছে। চিহ্ন হিসেবে রেখে গিয়েছে তাদের উৎসব, আদব কায়দা সর্বোপরি খাদ্যাভ্যাস। তাতেই উপরি পাওনা অগুনতি লোভনীয় খাবার। খাবারের উৎপত্তিস্থল হল সুদূর তুর্কি, পারস্য দেশ হলেও দিব্যি মন জয় করেছে বাঙালির। হেশেঁলেও পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে। পীরের দরগার শিরনি হয়েছে আমাদের পরিচিত সত্যনারায়ণের প্রসাদ ‘সিন্নি’। আর এর নতুন সংযোজন বাঙালির রান্নাঘরে তৈরি বিরিয়ানি।
ঈদ মানেই জিভে জল আনা খাবার। কাবাব, হালিম, বিরিয়ানি। রয়েছে মিষ্টি, সেমুই, হালুয়া, ফিরনি। শুধুমাত্র সেমুইয়ের মধ্যেই রয়েছে কত বৈচিত্র্য। এমন একটি জনপ্রিয় খাবার হল শির খুরমা। ফার্সি ভাষায় এর অর্থ দুধ আর খেজুর সহযোগে তৈরি মিষ্টি। সাবেকি শির খুরমা নানা দেশ ঘুরে রূপে, স্বাদে, কলেবরে বেড়েছে বই কমেনি। পেস্তা, কাজু, কিসমিসে এর স্বাদ খোলতাই হয়েছে। স্বাদের শাহী ভাবের জন্য শুধু বঙ্গদেশ নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ বুঁদ এতে। সেমুই সহযোগে দুধের কড়াপাকে তৈরি এই পদ ঈদের খাবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঈদে ঘরে বসেই জেনে নেওয়া যাক বানানোর প্রণালী। শাহী শির খুরমা বানাতে প্রয়োজন দুধ, ভাজা চিকন লম্বা সেমুই, কাজুবাদাম, পেস্তা, কিসমিস। এছাড়া শুকনো খেজুর, এলাচ, দারুচিনি গুঁড়ো। স্বাদ বাড়াতে গাঢ় দুধ, দেশি ঘি, জাফরান ও চিনি।
প্রণালীও খুব সহজ। প্রথমে একটি পাত্রে ঘি সহকারে সব বাদাম, কিসমিস, খেজুর ভেজে নিতে হবে। এগুলো তুলে নিয়ে একই পাত্রে আরেকটু ঘি দিয়ে এলাচ, দারুচিনি ভাজতে হবে। লাল রঙ এলে সেমুই দিয়ে অল্প আঁচে ভাজতে হবে। হালকা বাদামি রঙ এলে তাতে দুধ দিতে হবে। এই পর্যায়ে অনবরত দুধ ঘাটতে থাকা আবশ্যিক। সেমুই পুড়লে বা দুধ ধরে গেলে চলবে না। পাঁচ মিনিট পর ভাজা বাদাম খেজুর, কিসমিসের অর্ধেক তুলে নিয়ে বাকি সব উপকরণ দুধে ঢেলে দিতে হবে। ব্যস, দুধ ঘন হয়ে এলে পরিবেশনের পাত্রে ঢেলে ঠান্ডা করে নিতে হবে। তুলে রাখা বাদাম, কিসমিস, খেজুর কুচিয়ে উপরে ছড়িয়ে দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এই গরমে জমে যাবে ঠান্ডা ঠান্ডা শাহী শির খুরমা। স্বাদ বাড়াতে দিতে পারেন গোলাপ জল ও গোলাপের পাপড়ি।
চিত্র ঋণ – তর্পিণী ভুঁইঞা
Discussion about this post