শান্তিপুরের উৎসব শেষের সামিয়ানা টাঙাতে পারে না বোধহয়। বছর জুড়ে চলতে থাকে উৎসবের রেশ। আর বর্ষার সেরা উৎসব বোধহয় রথ যাত্রা। তো সেই জমকপূর্ণ উৎসব থেকে শান্তিপুর বাদ যাবে, তা আবার হয় নাকি! নদীয়ার শান্তিপুর প্রাচীন ঐতিহ্যের এক সংগ্রহশালা বলা যেতে পারে। রথের জন্য বিখ্যাত শান্তিপুরের গোস্বামী বাড়ি। কেন জানেন? কারণ এ বাড়ির রথ যাত্রায় পালিত হয় এক বিশেষ রীতি।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/1-16.jpg)
গোস্বামী বাড়ির এ রথ লোহা দিয়ে তৈরি, আটটি লোহার চাকা এবং নটি রত্ন বিশিষ্ট প্রায় চল্লিশ ফুট উঁচু। এ রথের ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে মধ্যম গোস্বামী বাড়ির সদস্য শ্রী সুব্রত গোস্বামী জানান যে তাঁদের পূর্বপুরুষেরা এ রথের সূচনা করেন। শুধু সংকীর্তন নয়, শোভাযাত্রাও হয় দেখার মত। আগে কপিকলের সিস্টেম ব্যবহার করে রঘুনাথকে রথে তোলা হতো।পরবর্তীকালে সারা বছর ধরে খোলা আকাশে রথ পড়ে থাকবার পর সেই কপিকল সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়। তারপর থেকে বিশাল রঘুনাথ মূর্তি আর রথে তোলা হয় না। বদলে ১৯৬৫ সালের পর থেকে শুধুমাত্র জগন্নাথ দেবকেই রথে তোলা হয়।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/2-12.jpg)
বর্তমানে রথের আগের দিন রঘুনাথ, জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রাকে অভিষেক করানো হয়। তারপর হয় দেবতার অধিবাস। এরপর ফল নৈবেদ্য দিয়ে চলে পুজো। তারপর রথকে কেন্দ্র করে সাতপাক প্রদক্ষিণ করিয়ে সেবায়তরা হাতে হাতে রথের এক একটি স্তর অতিক্রম করে জগন্নাথ দেব তাঁর নিদিষ্ট আসনে আসীন হন। এরপর শুরু হয় রথের দড়িতে টান দেওয়া। আর ভক্তবৃন্দেরা সমস্বরে চিত্কার করে বলে ওঠেন “আর বল আছে/ বল থাকতে বল দেয়না/ দোহাই শ্রী জগন্নাথের কাছে।”
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/3-10.jpg)
রথ এবার এসে পৌঁছায় বড়বাজারের কাছে তুলোপটির কাছে। সেখানে এসে রথ সাত দিন অবস্থান করে। মধ্যম গোস্বামী বাড়ির রথে এই কথাও শোনা যায় যে কোনো এক বা দু’বার রথের রশিতে টান দেবার রথ এগোয় না। এই সময়ে তাঁদের গৃহদেবতা রাধাবিনোদ জিউকে মন্দির গৃহ থেকে বের করে এনে রথে বসাবার পর রথ গতি পায়। গোস্বামী বাড়ির এই বিশেষ রথযাত্রা প্রায় ২০০ বছরের পুরনো।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – INSIDEVISION, mysepic.com
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/289160792_777717063609180_735667895926612496_n-min-1024x576.jpg)
Discussion about this post