ছাতা, ব্যাগ থেকে শুরু করে প্রেশার কুকার, মিক্সার গ্রাইন্ডার, ইনডাকশন ওভেন, এমনকি ইলিশ – উপহার হিসেবে এসব পেতে কার না ভালো লাগবে! কিন্তু তা যদি দেওয়া হয় ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির’-এ এক ইউনিট রক্তের বিনিময়ে, তাহলে লজ্জায় মুখ লুকোনো ছাড়া আর উপায় কী? রাজ্য সরকার নির্দেশ জারি করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেও খোদ মহানগরেই বারবার ঘটেছে এমন ঘটনা। নিজের দান করা রক্তের বিনিময়ে তিনি কী পাবেন, এখনও এমন প্রশ্ন করে বসেন অনেকেই। রক্তদান আন্দোলনের কর্মীদের শত প্রচেষ্টাতেও ফেরেনি মানুষের সচেতনতা।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2021/07/1-min-82-1.jpg)
রক্তদান আন্দোলনের কর্মী ও উদ্যোক্তাদের মতে, উপহারের লোভে অনেকেই রক্ত দিতে আসেন শারীরিক অক্ষমতা-অসুস্থতার কথা লুকিয়ে। আবার অনেকেই মানেন না পরপর দু’বার রক্তদানের মধ্যে জরুরী তিনমাসের ব্যবধানের নিয়মও। এতে সংগৃহীত রক্তের মান খারাপ হওয়ার পাশাপাশি ক্ষুণ্ন হয় স্বেচ্ছায় রক্তদানের মহিমাও। এর বিরোধিতা করে দীর্ঘ আন্দোলন ছাড়াও হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকেও। অবশেষে ২০১৮ সালের ২৫ মে রাজ্যের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধিকর্তা (রক্তসু্রক্ষা) স্বাক্ষরিত অর্ডার এসে পৌঁছায় সরকারী ও বেসরকারী সকল ব্লাডব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের হাতে। ন্যাকো এবং জাতীয় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের নিয়মাবলী উদ্ধৃত করেই সেখানে বলা হয়, স্বেচ্ছায় রক্তদানের বিনিময়ে রক্তদাতাকে যে টাকাপয়সা এবং উপহার (স্মারক ব্যতীত) দেওয়া হচ্ছে না, তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্লাডব্যাঙ্ককেই।
কিন্তু স্বাস্থ্য দপ্তরের নেওয়া এই পদক্ষেপের তিন বছর পরেও কি একটুও বদলেছে চিত্র? সম্প্রতি শ্রীরামপুরে এক রক্তদান শিবিরের প্রাক্কালে ঘটা এক ঘটনা তুলে দিয়েছে এই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। জানা গেছে, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের শ্রীরামপুর শাখার উদ্যোগে আগামী ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এক রক্তদান শিবির। সেই শিবিরে আসার জন্যই জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে গিয়ে উপহার কী আছে, এই প্রশ্নের মুখে পড়েন স্থানীয় এক রিকশাচালক। প্রসঙ্গত, এই শিবিরের উদ্যোক্তারাই অতীতে বহুবার উপহারের বিরুদ্ধে রক্তদানের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের হুঁশ ফিরবে কীসে, এর প্রকৃত উত্তর আজও অধরা।
Discussion about this post