কচুরির সংস্কৃত নাম ‘পূরিকা’। ‘কর্চরিকা’ আদি নাম। আর এখন, কচুরি। এই বিশেষ খাবারটির প্রতি বাঙালির দুর্বলতা বহু পুরনো। সময় গড়িয়েছে, বাঙালির টিফিন তালিকায় বহুদিন আগেই ঢুকে পড়েছে পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচের মতো বিদেশি খাবার। কিন্তু কচুরির কদর আজও কমেনি। বাঙালির আড্ডা থেকে অতিথি আপ্যায়নে কচুরির ভূমিকা এখনও একইরকম রয়ে গিয়েছে।
কচুরির গল্প শুরু করতে হলে, উত্তরের কলকাতায় পা রাখতেই হবে। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের পটলার দোকানের কচুরির গুনগান সেখানে কান পাতলেই শোনা যায়। শুধু কচুরি বিক্রি করেই সেঞ্চুরি। হ্যাঁ প্রায় একশো বছর ধরে কচুরির সেই জিভে জল আনা স্বাদকে বজায় রেখেই ব্যবসা করে চলেছে বাগবাজারের এই দোকান। সকাল হলেই দোকানের সামনে ভিড় জমে যায়। শুধু স্থানীয়রাই নয়, পটলার কচুরি বলা চলে গোটা উত্তর কলকাতায় খ্যাত। বাগবাজার স্ট্রিটের ওপর ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের ঠিক বিপরীতে পটলার কচুরির দোকান। কচুরি ছাড়াও ধোকার বড়া, তেলেভাজা, সিঙারা এসব। কাচের শো কেসের ওপারে, বাবু হয়ে বসে আছেন দিব্যেন্দু সেন। এখনকার মালিক। পটলা হলেন এনার কাকা। ভালোনাম কার্তিক সেন। তবে দোকান শুরু করেছিলেন দিব্যেন্দু বাবুর ঠাকুরদা শশীভূষণ সেন। কচুরী আর ছোট আলুর তরকারি, শালপাতার বাটিতে ছড়াছড়ি হাতে হাতে। বিকেলে এখানে রাধাবল্লভী পাবেন। দুটি বল্লভী, দু’টুকরো আলুর দম।
আজকাল কলকাতায় ফুচকার মতো ক্লাব কচুরিও দেদার বিকোচ্ছে। তারপর? তার আর পর নেই। বেরিয়ে পড়ুন এবার। ঐ বহু দূর হতে কচুরির ডাক, থুড়ি, সুবাস ভেসে আসে। কচুরির দাম আট টাকা করে, দুটো খেলে বেশ পেট ভরবে। আলুর দমটাও মারকাটারি। সামলে খাবেন। পরের দিন আবার খেতে হবে তো!
Discussion about this post