বছরের সব উৎসবের শেষে এবার হাজির সকলের প্রিয় কেক উৎসব অর্থাৎ বড়দিন। আর বড়দিন মানেই তো কেক! শীতের মরশুমে বেকারির সুস্বাদু ও টাটকা কেক যোগে একটা দিনযাপন। আমাদের মহানগরীর বুকে রয়েছে এমন কিছু বিখ্যাত বেকারি, যেগুলোর পথ চলা শুরু হয়েছে ব্রিটিশদের হাত ধরে। তেমনই এক বিখ্যাত বেকারি হল নিউ মার্কেটের দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের ‘দ্য বেকারি’। কলকাতার ‘ফাইনেস্ট বেকারি’ ও বলা হয় একে। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো এই বেকারি আজও বয়ে নিয়ে চলেছে পুরনো কলকাতার সেই আমেজ ও ঐতিহ্য।
১৮৪০-৪১ সালে ডেভিড উইলসনের হাত ধরে পথ চলা শুরু হয়েছিল আজকের দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলটির। শুরুতে নাম ছিল উইলসন হোটেল। লোকমুখে হয়েছিল অকসান হোটেল। পরে পরিচিতি পায় গ্রেট ইস্টার্ন নামে। একটা সময় একে প্রাচ্যের রত্ন বলা হত। তবে এই হোটেল তৈরি হওয়ার আগে উইলসন একটি বেকারিই চালাতেন বলেই জানা যায়। এরপর ১৯৫০ এর দশকে গ্রেট ইস্টার্ন বেকারি তৈরি হয়। কিন্তু তৎকালীন কিছু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০০২-০৩ নাগাদ বন্ধ হয়ে যায় এই হোটেল।
কিন্তু ললিত সুরি নামে একজন ব্যক্তি হোটেলটি কিনে নিয়ে আবার চালু করার ব্যবস্থা করেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে আবার আরম্ভ হয় পথ চলা। সেই থেকেই এর নাম হয় দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল। কিন্তু বদলায়নি পুরনো বেকারির ঐতিহ্য। আজও শতাব্দী প্রাচীন একটি কেকের খাতা সেখানে রয়েছে যেটা মেনে আজও কেক তৈরি হয় ‘দ্য বেকারি’ তে। এই বেকারির লাঠি বিস্কুট, গোল্ডেন লোফ, পাউরুটি আজও ভীষণভাবে জনপ্রিয় মহানগরীর মানুষদের কাছে। সবরকম মানুষদের কথা ভেবে এখানে ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা অবধি, এমনকি ৮০০ টাকা পর্যন্ত দামের কেক পাওয়া যায়। তাই বড়দিন ছাড়াও বছরভর কেকপ্রেমীদের ভিড় লেগেই থাকে কলকাতার স্বনামধন্য ‘দ্য বেকারি’ তে।
Discussion about this post