কথায় বলে মনের ইচ্ছা থাকলে কোন প্রতিবন্ধকতায় স্বপ্ন পূরণে বাধা হতে পারে না। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের রিন্টু মালি যেন তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ। জীবন সগ্রামের যাত্রাটা শুরু , জাতীয় সড়কের পার্শ্বে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান থেকেই। যেখানে কোনো রকমে দুই বেলা খাওয়ার জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা পরিবারের। সেই পরিস্থিতিতে ও স্বপ্ন দেখা থেমে থাকেনি রিন্টু মন্ডলের। ছেলেটা স্বপ্ন দেখতো একদিন বড় হয়ে বাবা-মার দুঃখ কষ্ট দূর করবে।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/02/2-4.jpg)
চরম প্রতিকূলতার মাঝেও অধ্যবসায় এবং মনের জেদ নিয়ে এগিয়ে চলা ছেলেটি ২০২১ এর সেপ্টেম্বরে নিট পরীক্ষায় বসে। এরপরই নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ছেলেটি। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ আসে। এ যেন চরম দরিদ্রতার মাঝেও স্বপ্নপূরণের এক গল্প। ছেলের সাফল্যে আপ্লুত রিন্টু মন্ডলের মা মীরা মন্ডল মালি জানান “ছোটো থেকেই আমারও ইচ্ছে ছিল মানুষের সেবা করব, যদিও অভাবের সংসারে করে ওঠা সম্ভব হয়নি। তাই ছেলেকে ছোট থেকেই শেখাতাম জীবনে এমন কিছু কর, যেখান থেকে মানুষের সেবা করতে পারবি। আজ ও মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে আমি অত্যন্ত খুশি।”
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/02/1-3.jpg)
জানা গিয়েছে শহরে জাতীয় সড়কের পাশেই সরকারি জায়গায় বহু বছর ধরে বাসবাস করত রিন্টু ও তার পরিবার। ২০২০ সালে রাজনৈতিক সভার কারণে তড়িঘড়ি পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মেধাবী ছাত্রটির পরীক্ষার আগে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। মাথার উপরে ছাদ না থাকলেও জীবনের লড়াইটা থেমে থাকেনি রিন্টুর, বুনিয়াদপুর হাই স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা কেয়া সরকার সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তার পাশে দাঁড়ান। এছাড়াও শহরে গৌরাঙ্গ বাবু কিংবা পার্থ বাবুর মত সহৃদয় মানুষজনদের সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকে রিন্টু।
Discussion about this post