সামনেই বড়দিন, খ্রিস্ট উৎসব, নতুন বছর। উৎসব উদযাপনের উন্মাদনার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কেক, পেস্ট্রির চাহিদা। একটু খুঁজলেই শহরের বড় বড় দোকানে নামিদামি ব্র্যান্ডের চটকদার কেক মিলবে। মিলবে কেকের নিত্যনতুন ডিজাইন। মিলবে হরেকরকম স্বাদ ও ফ্লেভার। সারাবছরই এসব মিললেও, উৎসবের মেজাজের মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ে কেকের স্বাদ-রূপ-রস-গন্ধ। কিন্তু শহরতলি বা মফস্বলের পুরনো বেকারিগুলির চাহিদা ব্র্যান্ডেড বাজারের সঙ্গে কতখানি পাল্লা দিতে পারে? সেই উত্তরই পাওয়া গেল বীরভূম জেলার রামপুরহাট শহরের সবচেয়ে পুরনো সুভাষ বেকারি।
সুভাষ বেকারির বর্তমান মালিক নীলরতন দাস জানালেন, সুভাষ বেকারির বয়স প্রায় ৭০ থেকে ৮০ বছর। রামপুরহাট শহরে বিগত কয়েক বছরে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ফাস্ট ফুডের দোকান, কেকের দোকান, বাহারি শপিং মল। আজ অথেন্টিক খাবারের স্বাদ নিতে, বা ব্র্যান্ডেড পোশাক-পরিচ্ছদ কিনতে মানুষকে কলকাতায় বা নিদেনপক্ষে বোলপুরেও ছুটতে হয়না। সবই মেলে হাতের কাছেই। কিন্তু, এসবের পরেও নীলরতন বাবুর মতে বেকারির পাউরুটি, বা কেকের চাহিদা কমেনি মোটেই। এর প্রমাণ তাঁর দোকানটিই। বছরের পর বছর একই জায়গায়, একই চেহারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিত্যনতুন এবং পুরনো মানুষের ভিড় তাতে লেগেই থাকে।
অতীতে বেকারির সমস্ত কাজকর্ম হাতেই করা হত। করতেন কর্মচারীরা। বর্তমানে কর্মচারী সংখ্যা পাঁচ থেকে সাতজন। কেবলমাত্র ময়দার ‘ডো’ মেশিনে মাখানো হয়, তাছাড়া এখনও সব কাজ হয় হাতেই। তৈরি হয় পাউরুটি, বিস্কুট, কেক। বড়দিনের বাজারেও তৈরি হয় বড়দিনের কেক। ৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকা দামের কেক পাওয়া যায় বেকারিতে। ফ্রুট কেক, চকোলেট কেক মেলে। রামপুরহাট শহরের মানুষ তো বটেই, আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিয়মিত মানুষ আসেন কেক, পাউরুটি কিনতে। এছাড়া, পাইকারি দরে কেক, পাউরুটি অন্য ব্যাবসায়িদের কাছেও বিক্রি হয়ে থাকে। শুধু বড়দিনের উৎসবের মেজাজে নয়, এমনভাবেই সুভাষ বেকারি রয়ে যাবে, এমনটাই বিশ্বাস মালিক নীলরতন বাবুর।
Discussion about this post