শীতের পিঠে পুলির সাথে বাঙালিদের প্রেম বহুদিনের। শীত মানেই খাওয়া দাওয়ার একেবারে মোক্ষম সময়। কিন্তু এত রকম খাবারের মধ্যেও পিঠে বললেই আমরা শীতের আসল আবেগের স্বাদ পেতে পারি। কিন্তু এই পিঠের সাথে প্রেম কেবল বাঙালিদেরই, এমন ভাবাটাও কিন্তু বেশ ভুল। বাংলা ছাড়াও পূর্ব ভারতের যেমন অসম, ওড়িশা প্রভৃতি বেশ কিছু জায়গার মানুষ পিঠেপ্রেমী। নিয়মমতে পিঠে কিন্তু শুরু থেকে শেষ অবধি পুরোটাই খাঁটি নিরামিষ পদ। কিন্তু কালের নিয়মে পিঠে এখন শুধু নিরামিষের মধ্যে আর আটকে নেই। বিভিন্নরকম আমিষ উপকরণের ছোঁয়ায় তৈরি পিঠেও আজ ভোজন রসিকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় তেমনই এক সুস্বাদু পদ হল পাকন পিঠে।

রসে ভেজা সুস্বাদু পাকন পিঠে হল বাংলাদেশের ‘সিগনেচার ডিশ’। এই পিঠে অনেকরকমভাবেই বানানো যায়। তবে মুগ ডাল, চাল গুঁড়ো এবং ডিমের মিশেলে তৈরি মুগ পাকন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। উপকরণ হিসেবে লাগে মুগ ডাল ১ কাপ, নুন স্বাদ মতো, ডিম ১টি, চালের গুঁড়ো ২ কাপ ও নারকেল কোড়া। তেল একটু বেশি পরিমাণে লাগে কারণ ডুবো তেলে পিঠেগুলো ভেজে নিতে হয়। রসের জন্য চিনি ২ কাপ, জল ৩ কাপ, গোটা এলাচ, দারুচিনি ও তেজপাতা ২টো করে।
শুরুতেই ডালটা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে বা অল্প সেদ্ধ করে নিয়ে ভালো করে বেটে নিতে হবে। এরপর ডাল বাটাটি আঁচে বসিয়ে একটু নুন ও নারকেল কোড়া দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর ওভেন থেকে নামিয়ে অল্প ঠান্ডা হলে সেটি চালের গুঁড়োর সঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। নরম হওয়ার জন্য ১ টা ডিম ফাটিয়ে ভালো করে মেখে ডো বানাতে হবে। এবার সেটা কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে রস তৈরির উপকরণগুলো একটা পাত্রে নিয়ে ভালো করে জ্বাল দিয়ে নিন। গাঢ় রস তৈরি হয়ে গেলে রুটির মত একটা করে ছোটো ছোটো ডো নিয়ে তা বেলে নিজেদের পছন্দসই নকশা তৈরি করে নিন। এবার ডুবো তেলে একটা একটা করে ভেজে পিঠেগুলো রসে দিয়ে দিলেই তৈরি মুগ পাকন। ১০ মিনিট রসে রাখার পর পিঠেগুলো থেকে অতিরিক্ত রস ঝরিয়ে নিলে ভালো।
ব্যাস! তাহলে আর দেরি কীসের? এই শীতে যারা একটু অন্যরকম পিঠে তৈরি করবেন বলে ভাবছেন তারা অবশ্যই বানাতে পারেন এই মুগ পাকন। রূপে ও স্বাদে অতুলনীয় এই পিঠে মুখে পড়লেই একটাই শব্দ, আহা!
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – ঢাকা পোস্ট
Discussion about this post