জীবনটা কোনো অংশেই আড়াই প্যাঁচের জিলিপির চেয়ে কম নয়! কী ভাবছেন? জীবনের জটিল কোনও গল্প বলব? একদমই না! গল্প রয়েছে বৈকি , তবে তা বেশ অভিনব। ভোজনরসিক বাঙালির জিভে জল আনা জিলিপির গল্প। তবে, এই জিলিপি মিষ্টি নয় বরং স্বাদে টক, ঝাল ও নোনতা। মাটন কিমা দিয়ে তৈরি এই ভিন্ন স্বাদের জিলিপি ভেজে খাওয়া যায় মুখরোচক স্ন্যাকস্ হিসেবে কিংবা ঘন ঝোল রান্না করেও ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়। ঝোল খেলে মাংসের জিলিপি ঝোলে দেওয়ার পর পরিবেশন করার আগের মুহূর্তে আঁচ কমিয়ে দিতে হবে। তবে মুখরোচক হিসেবে ফিসফ্রাই, পকোড়ার সাথে পাল্লা দিতে পারে এই ‘আমিষ জিলিপি’। বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় চা কিংবা কফি উইথ দিজ্ ‘আমিষ জিলিপি’ বেশ রোমাঞ্চকর!
জিলিপি মানেই যে রসে ফেলে; গরম দুধ, ঠান্ডা দই বা রাবড়ি সহযোগে খেতে হবে তা খুবই ভুল কথা! দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে শুরু করে মধ্য প্রাচ্যে বিভিন্ন যুগে স্বমহিমায় নিজের জায়গা দখল করেছে এই মাংসের জিলিপি। ‘হবসন-জনসন’র লেখা বাইবেল অনুসারে, তুরস্ক থেকে পারস্যে জিলিপির আগমন পনেরোশো শতকে, তাদের সঙ্গেই ভারতে পদার্পণ করেন মহামান্য জিলিপি। এতদিন ময়দা, কলাইয়ের ডাল, মুগের ডাল আর ছানার জিলিপির কথা তো শুনলেন। এবার নাহয় মাংসের জিলিপির রন্ধন প্রণালীটা দেখে নেওয়া যাক!
মাংসের জিলিপির উপকরণ – বিউলির ডাল ৫০০ গ্রাম, চালের গুঁড়ো ২০০ গ্রাম, মাটন কিমা ৫০০ গ্রাম, পিঁয়াজ ৩০০ গ্রাম, রসুন কুচি ২০ কোয়া, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, জোয়ান এক টেবিল চামচ, বেকিং পাউডার এক টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো এক টেবিল চামচ, দারচিনি পাঁচটি (ঝোল হলে), পাতি লেবুর রস দুই টেবিল চামচ, নুন আন্দাজ মতো, সাদা তেল ৫০০ মিলি।
প্রণালী – বিউলির ডাল আগের দিন ভিজিয়ে রাখতে হবে। মিক্সিতে বাটলে কিন্তু আলাদা জল দেওয়া যাবে না। মাংসের কিমা, নুন, লেবুর রস ও আদাবাটা দিয়ে প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করে রাখতে হবে। এবার পিঁয়াজ কুচি (খুব মিহি করে কুচোনো) , রসুন কুচি, গোলমরিচ গুঁড়ো ও বেকিং পাউডার দিয়ে ডাল ও কিমা ভাল করে মেশাতে হবে। চালের গুঁড়ো হাতে রাখতে হবে, আগে মিশিয়ে দিলে চলবে না। মণ্ড শক্ত করতে কাজে লাগবে। খুব শক্ত হলেও কিন্তু চলবে না! নরম করতে হলে তেল বা সামান্য জল দেওয়া যেতে পারে। শক্ত করে নিয়ে ফানেলের সাহায্যে গরম তেলের উপর আঁকিবুকি টেনে দুই পিঠ উলটে কড়া করে ভেজে তুলে নিতে হবে মাংসের জিলিপি!
বলা বাহুল্য, মুচমুচে খেতে এই জিলিপির জন্য শুধু আড়াই প্যাঁচ বরাদ্দ নয়! ইচ্ছেমত প্যাঁচের সংখ্যা নির্ধারণ করে নেওয়া যেতেই পারে। সর্বোপরি, প্রাণের প্রিয় মানুষকেও জিলিপির প্যাঁচে ফেলাটা ইজ নট অ্যা ব্যাড আইডিয়া!
“ওগো ‘জিলিপী’ তোমার মান্য ত্রিভুবনে!”
Discussion about this post