বিভিন্ন জায়গাতেই বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। আর তার সাথে সাথে শীতকালীন বিভিন্ন রোগ অর্থাৎ জ্বর- সর্দি-কাশি থেকে রেহাই পেতে বরিশাল নগরীর ফুটপাতে চলছে বরিশালবাসীর তোড়জোড়। খোলসা করে বলা যাক! নগরবাসী শীতকালীন সতর্কতা মেনে এখনই ভিড় জমাচ্ছেন বরিশালের ফুটপাতের শীতের জামাকাপড়ের দোকানগুলিতে। হালকা থেকে শুরু করে মাঝারি শীতের জন্য গরম পোশাক – জমে উঠেছে বেচাকেনা।
বেশিরভাগ ক্রেতাদের জমায়েত দেখা যাচ্ছে নগরের সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদের সামনে। শুধু তাই নয়, হাজি মহম্মদ মহসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, সদর রোডসহ নগরের বহু জায়গার ফুটপাত ও মার্কেটগুলোর ভিড় ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রধানত ছোটদের এবং বয়স্কদের কাপড়ের চাহিদাই বেশি। যেমন মাথার টুপি, পায়ের ও হাতের মোজা থেকে শুরু করে মাফলার, সোয়েটার, ফুলহাতা গেঞ্জি- একেবারে গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটে এ বছর কম্বলের দোকানগুলোর আয়ও যথেষ্ট। তবে ‘ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন’ ব্যবসায়ীরাও। ভিড় দেখে প্রতিটি পণ্যের অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ক্রেতাদের একাংশ। তাদের একটু সমস্যাও হচ্ছে বৈকি! বেচা কেনা মানেই তো একটু দামাদামি, একটু সময় ধরে নেড়ে ঘেটে দেখে পছন্দের জিনিস কেনা। তবে এক্ষেত্রে বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামেই কম সময়ে কিনতে হচ্ছে পছন্দের পোশাক।
শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের দেদার ভিড় থেকে বেজায় খুশি ব্যবসায়ীরা। বরিশাল জাদুঘরের সামনে ফুটপাতের কবির হোসেন নামক এক ব্যবসায়ীর কথায়, তারা বছরে দুটো ঈদ ছাড়া বাড়তি ব্যবসা করার সুযোগ পায় এই শীতেই। তবে সারাবছর আবার এ সুযোগ পাওয়া যায়না। অপর এক ব্যবসায়ী আলম মিয়া জানান, গত বছরও জমজমাট ছিল শীতকালীন এই বেচা কেনা। তবে এবার শীত পরতেই ক্রেতারা আগে ভাগে শীতের কাপড় কিনে নিচ্ছেন।
ফুটপাতের বাজারে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ কেনাকাটা করছেন। পলাশপুর নামক এলাকার একজন স্থানীয় তথা ক্রেতা সুফিয়া বেগম জানান, বেশ জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগেই এবছর ফুটপাতের দোকানগুলোতে তিনি এসেছেন শীতের পোশাক কেনার জন্য। আরও জানান, যে এই দুর্মূল্যের বাজারে বর্তমানে সংসার চালাতেই হিমিশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত ক্রেতাদের। তাই বেশি দামের পোশাকের বদলে ফুটপাতের পোশাকই তাদের একমাত্র সম্বল। সোহেল সন্যামাত নামক এক ক্রেতা যিনি পেশায় রিক্সাচালক, তিনি জানান যে সন্ধের পরে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে একটি পছন্দসই সোয়েটার কিনেছেন মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে। ১০০ টাকার এই সোয়েটার টাই তার এবছরের পুরো শীত মোকাবিলা করার অস্ত্র। তার কথায়, ফুটপাতের দোকানগুলি হল একরকম গরিবের ‘শপিং মল’।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – সমকাল
Discussion about this post