অকালপ্রয়াত কবি পিনাকী ঠাকুরের লেখায় উঠে আসে গোয়ালন্দ ঘাটের কথা। তিনি লিখেছেন, ” নাম শোনছেন গোয়ালন্দ? স্টিমার ঘাটে ভাতের হোটেল। / ইস রে সে কী ইলশে মাছের সোয়াদ – কী ভাই, শোনছেন নাম? হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ ” এ ঘাট পূর্ববঙ্গের সাথে কলকাতাকে আত্মীয়তায় বেঁধে রেখেছে বলা যায়। ১৮৬২ সালে কলকাতা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়। এরপর ১৮৭১ সালে এই রেলপথ সম্প্রসারিত হয় গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত। ঢাকা থেকে কলকাতা যাওয়ার তখন প্রধান ভরসা গোয়ালন্দ ঘাট। আর এ ঘাট বিখ্যাত ছিল চিকেন কারির জন্য। যার নাম ‘গোয়ালন্দ স্টিমার কারি।’ এর স্বাদ যে একবার পেয়েছে তার ভোলার কথা নয়। কী ছিল এর গোপন রেসিপি?
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/1-min-2022-06-10T190716.081.jpg)
একটা গোটা মুরগি কেটে তাতে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, লঙ্কা, আর পরিমাণ মতো নুন হলুদ মাখিয়ে ঘন্টা খানেক রাখতে হবে। এরপর এই মশলা মাখানো মাংস বড় হাঁড়িতে ঢেলে নিতে হবে। তারপর আঁচ কমিয়ে একটু নেড়ে নিতে হবে। এবার কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রেখে মাংসটা নরম হতে দিতে হবে। অবশেষে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করতে পারেন ‘গোয়ালন্দ স্টিমার কারি।’ সুগন্ধ আর স্বাদে এ একেবারে অতুলনীয়।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/2-3.jpg)
স্টিমার ঘাট থেকে সে সময়ে কলকাতা ফিরতেন বাঙালিরা। তবে মুরগি ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু এ পদের ঘ্রাণ থেকে নিজেকে আটকে রাখা খুবই মুশকিল। মাঝি মল্লাদের তৈরি এ রান্না ছিল ভীষণ আকর্ষণীয়। যদিও এখন সে মাঝি মল্লারা আর নেই। কিন্তু সেই থেকে এ পদ রয়ে গেছে ‘গোয়ালন্দ স্টিমার কারি’ হয়ে। আর এখন তো বাঙালির ঘরে মুরগি নিষিদ্ধ নয় একেবারেই। তবে চটপট রান্না ঘর ভরে উঠুক ‘গোয়ালন্দ স্টিমার কারির’ ঘ্রাণে।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2022/06/3-3.jpg)
তথ্য এবং চিত্র ঋণ – মহঃ সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ
Discussion about this post