জিভে পড়লেই আলাদা মজা, টাটকা তাজা জিভে গজা– শুকনো খাস্তা মিষ্টির তালিকায় জিভে গজার জুড়ি মেলা ভার। আর এর নাম শুনলেই প্রথম মাথায় আসে পুরীর বিখ্যাত কাকাতুয়ার দোকানের সুস্বাদু জিভে গজা। পুরীর সমুদ্র, জগন্নাথদেবের মন্দির ছাড়াও জিভে গজার টান এড়ানো মানুষের পক্ষে সত্যিই অসম্ভব। একরকম আবেগের নাম হল এই কাকাতুয়ার জিভে গজা। তবে কাকাতুয়া না হলেও হাওড়ার মুন্সিরহাটের ফনিভূষণ কুন্ডুর দোকানের জিভে গজার স্বাদও কিন্তু কম যায় না একেবারেই। শুধুমাত্র কোনো বিশেষ উৎসবে নয়, সারাবছর ধরেই দোকানে মেলে এই মিষ্টি। এই দোকানের রসগোল্লা-পান্তুয়ার মতই জিভে গজার চাহিদাও একেবারে আকাশছোঁয়া।
দোকানের বয়স নয় নয় করে ১৩৫ বছর। এখানকার প্রত্যেকটি মিষ্টির মতই জিভে গজার টানেও ক্রেতারা বারবার ফিরে আসেন এই দোকানে। সারাবছর এই মিষ্টির চাহিদা থাকলেও শীতের শেষে, মানে মাঘ মাসের দিকে বেশ ভালোই চাহিদা থাকে প্রতিবছর। ওই সময় নাকি এক মণ ওজনের জিভে গজা বিক্রি হয় প্রতিদিন, তাও যেন চাহিদার তুলনায় কম পড়ে যায়। আসলে ক্রেতাদের কাছে এই দোকানের মিষ্টি মানে বেশ ভরসার জায়গা। তাই ফনিভূষণ কুন্ডুর দোকানের মিষ্টি শেষ পাতে না হলে তাদের ঠিক চলে না।
ক্রেতাদের কথা অনুযায়ী, শুরু থেকে নিয়মিত অন্যান্য মিষ্টির মতই একইভাবে জিভে গজাও তৈরি হয়ে চলেছে এখানে। এত বছরেও স্বাদে এবং গন্ধে মিষ্টির মানের পরিবর্তন লক্ষ্য করেননি ক্রেতারা। তাই মুন্সিরহাটের বিস্তীর্ণ এলাকার স্থানীয়রা তো বটেই, তাছাড়া নিয়মিত খদ্দেররাও বাড়িতে নিয়ে যান এই জিভে গজা। ময়দার সঙ্গে আরও কিছু উপকরণ মিশিয়ে ঘি অথবা তেলে ভেজে নেওয়া হয় জিভে গজাগুলোকে। এরপর বেশ গাঢ় রসে ডুবিয়ে তৈরি হয় জিভে গজা। এভাবেই ১৩৫ বছর ধরে ক্রেতাদের সাধপূরণ, থুড়ি ‘স্বাদ’-পূরণের দায়িত্ব বয়ে নিয়ে চলেছে ফণিভূষণ কুন্ডুর মিষ্টির দোকান।
Discussion about this post