চলছে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ। আজ তৃতীয় দিন, চকলেট ডে। সকলে তার প্রিয় মানুষটির হাতে তুলে দেবে রকমারি স্বাদ ও ধরনের চকলেট। চকলেটের বাক্স উপহার হিসেবে দেওয়ার প্রথাটি শুরু হয়েছিল উনিশ শতকে। বিখ্যাত চকলেট কোম্পানি ক্যাডবেরির প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ক্যাডবেরিই ভ্যালেন্টাইন ডেতে চকলেট গিফট দেওয়ার প্রচলন শুরু করেছিলেন। ওই সময় থেকেই গিফট হিসেবে চকলেট দেওয়া একটি প্রথায় পরিণত হয়।
বেলজিয়াম,সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি চকলেটের জন্য সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। চকলেটের অর্থনৈতিক দিকের প্রসঙ্গে সবচেয়ে উল্লিখিত বারাকোয়ার চকলেট কারখানা। এটি কিউবার অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ। এই কারখানাটি ১৯৬৩ সালে আর্নেস্টো (চে) গুয়েভারার প্রতিষ্ঠা করেন। চে গুয়েভারার, কিউবার মুক্তিযুদ্ধের এক উজ্জ্বল নাম। তার নির্ভীক দৃষ্টি বিশ্বজুড়ে টি-শার্ট এবং কলেজের ছাত্রাবাসের দেয়ালে দৃঢ়ভাবে গাথা রয়েছে। ফিদেল কাস্ত্রোর বিপ্লবী সরকারের প্রথম দিকে চে গুয়েভারার ছিলেন কিউবার শিল্পমন্ত্রী।
উপকূলীয় বারাকোয়া কিউবার শহরগুলির মধ্যে অনন্য। একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এটি কিউবার রাজধানী ছিল, কিন্তু দেশটি বসতি স্থাপনের সাথে সাথে অন্যান্য অঞ্চলের উন্নতি ঘটে এবং বারাকোয়া ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে চে গুয়েভারার তৈরী এই চকলেট কারখানা তৎকালীন কিউবার স্থানীয় অর্থনীতিতে এক উদ্দীপনা সরবরাহ করে। বারাকোয়ার চকলেট কারখানার প্রবেশপথকে চিহ্নিত করে ‘ফ্যাব্রিকা ডি চকোলেট’ শব্দের পাশে গুয়েভারার তথ্য সমন্বিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ। কারখানার কর্মচারীরা মাঝে মাঝে বিনামূল্যে চকোলেটের বাক্স পান। যা তারা পর্যটকদের কাছে দুই ডলার প্রতি বারে বিক্রি করেন।
এই চকলেটের সমৃদ্ধ গন্ধ এবং মসৃণ টেক্সচার আমেরিকান মিল্ক চকলেটের তুলনায় বেশী আকর্ষণীয়। ৫০ বছর পার করে, বেড়েছে চকলেটের জনপ্রিয়তা। কারখানার বাতাসে আজও ভেসে বেড়ায় গুয়েভারা সেই বিখ্যাত উক্তি, “বাস্তববাদী হও, অসম্ভবকে দাবি করো!” আজ মিষ্টি স্বাদের চকলেটের সাথে জড়িয়ে আছে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক কাঠামো। চকলেট আবিষ্কারের প্রথমে বাজারে তা এলেও তিতকুটে স্বাদের জন্য তা মানুষের মনে জায়গা করতে পারেনি। তবে পরে বিখ্যাত সুইস চকলেট প্রস্তুতকারক ড্যানিয়েল পিটার নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। তখন থেকেই চকলেটের বাণিজ্যিক প্রসার শুরু। আর আজ চকলেট দিয়ে মিষ্টি মুখ ছাড়া যেন কোন গুরুত্বপূর্ণ দিনই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
Discussion about this post