অভাব থাকলেই কোনও মানুষ যে সারাজীবন গরিব হয়ে থাকেন না সেই নজির আমাদের আশেপাশে আখছার মেলে। বুদ্ধি আর নিষ্ঠা একযোগে শানালেই ১২ টাকার পুঁজি দিয়ে শুরু করা হারমোনিয়ামের দোকানই একদিন ‘যতীন অ্যান্ড কোং’ হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2020/09/119032674_143528894082276_8049084548946322242_n.jpg)
যতীন্দ্র মোহনের জন্ম ১৮৮০ সালে। ছোট থেকেই বাপ-মা হারা কিশোর একদিন পেটের তাগিদে নাম লেখায় এক যাত্রাদলে। সেখান থেকেই বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তার পরিচিতি। তবে এসবের মধ্যে তার কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল হারমোনিয়াম। তৎকালীন সময়ে ঢাকা বিখ্যাত ছিল বাদ্যযন্ত্রের জন্য। সে সময় পাটুয়াটুলী, শাঁখারি বাজার, ইসলামপুর, তাঁতিবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের দোকান।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2020/09/118987588_143528930748939_2512275409737181134_n.jpg)
সেখান থেকেই যতীনের ইচ্ছে হয় হারমোনিয়ামের দোকানে কাজ করার। ঢাকার আমপট্টিতে ছিল হারমোনিয়ামের দোকান ‘দাস অ্যান্ড কোং’। কিন্তু সেখানে তার চাকরি জুটল না। তবে যতীন্দ্র মোহনও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়, চাকরি না মিললেও দোকানের বাইরে দাঁড়িয়েই সে শিখে নিল হারমোনিয়াম বানানো।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2020/09/118971973_143529077415591_672513004368022081_n.jpg)
এরপর দূর সম্পর্কের এক পিসির থেকে মাত্র ১২ টাকা ধার নিয়ে হারমোনিয়াম বানিয়ে ব্যবসা শুরু করে যতীন্দ্র মোহন। আর সেই প্রথম হারমোনিয়াম বিক্রি হয় ২৫ টাকায়। এভাবেই বেশ কিছু হারমোনিয়াম তৈরি করে বিক্রি করতে থেকেন যতীন্দ্র মোহন। অবশেষে সেই মুনাফা দিয়ে ১৯১০ সালে আশেক লেনে দোকান খুললেন যতীন্দ্র মোহন। নাম দিলেন ‘যতীন অ্যান্ড কোং’। আজও এই দোকানটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য বহন করে নিয়ে চলে।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2020/09/118962255_143529110748921_3760237658802194722_n.jpg)
এই প্রসঙ্গে, ‘ঢাকা পাচাস বার্স পহেলে’ গ্রন্থে হাকিম হাবিবুর রহমান লিখেছেন, ‘এমন একসময় ছিল যখন যতীন বাবুর দোকানে নিয়মিত শনি ও মঙ্গলবার গানের জলসার আয়োজন হতো। এ গানের জলসায় ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ, কাজী মোতাহের হোসেন, প্রসন্ন বণিক, ভগবান চন্দ, সেতারী থেকে শুরু করে সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁও জলসায় যোগ দিতেন।
Discussion about this post