দু’হাতে তালি দিলেই মন্ডা-মিঠাই এসে হাজির; সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজা দেশে সিনেমার সেই বিখ্যাত দৃশ্য আজও বাঙালির মনে রসনা জাগায়। তবে সিনেমার পর্দার বাইরেও বাস্তবের মাটিতে জন্ম নিয়েছিল এক অনন্য স্বাদের মন্ডা, যার ঘ্রাণ আর স্বাদ মানুষকে টেনে আনে বারবার। একবার যিনি এই মন্ডা খেয়েছেন, তিনি জানেন এর সরলতায় লুকিয়ে আছে অসাধারণ মুগ্ধতা। আজও কোচবিহারের প্রেমেরডাঙা এলাকায় সেই ঐতিহ্যের স্বাদ খুঁজতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় জমান মানুষ।
এই মন্ডার কারিগর ও ব্যবসায়ী তরুণ কুমার ধর। তাঁর মাতামহ প্রথম এই মন্ডা তৈরি ও বিক্রি শুরু করেছিলেন। সেখান থেকেই পারিবারিক সূত্রে তিনি এই ব্যবসা পান। ১৯৬০ সালে প্রেমেরডাঙায় এই মন্ডার দোকানের যাত্রা শুরু হয়। দাদুর প্রয়াণের পর দায়িত্ব এসে পড়ে তরুণবাবুর কাঁধে। বর্তমানে সীমিত পরিমাণে প্রতিদিন মন্ডা তৈরি হয়, আর ক্রেতারা কেউ দোকানে বসে খান, কেউ আবার প্যাকেটে ভরে বাড়ির জন্য নিয়ে যান। মাত্র দশ টাকায় পাওয়া এই মন্ডা। যা আজ জেলার সর্বত্র পরিচিত নাম।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই মন্ডার কোনও শাখা দোকান গড়ে ওঠেনি। তবু বিক্রিও কমেনি এক বিন্দুও। বরং দিন যত গড়িয়েছে, খ্যাতি তত ছড়িয়েছে। বিজ্ঞাপন নয়, মানুষের মুখে মুখেই ছড়িয়েছে এই মন্ডার গল্প। স্বাদ, ঐতিহ্য আর সততার মেলবন্ধনে প্রেমেরডাঙার এই দশ টাকার মন্ডা আজ শুধু একটি মিষ্টি নয়, কোচবিহারের গর্ব হয়ে উঠেছে।






































Discussion about this post