দোল পূর্ণিমা বাঙালী জীবনে এক বড় উৎসব। তবে মধ্য কোলকাতার দোলযাত্রা আবার এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বহু দশকের ট্র্যাডিশন এখানে দোলের সময়ে ফুটকড়াই ও মঠের সঙ্গে ‘ঘি-পোয়া’। এই মিষ্টান্নটি একমাত্র দোলের সময় কিছু দিন মধ্য কোলকাতার কিছু মিষ্টির দোকানে পাওয়া যায়। এর মধ্যে হিদারাম ব্যানার্জি লেনে বিদ্যাসাগর মশাই একসময় যেখানে থাকতেন তার পাশেই বিখ্যাত দোকান নব কৃষ্ণ গুঁই ঘি-পোয়ার জন্য সুবিখ্যাত। এদের আরেকটি শাখা নির্মল চন্দ্র স্ট্রিটে ভীম চন্দ্র নাগ দোকানের পাশে। এছাড়া এই অঞ্চলের আরো অনেক ছোট বড় মিষ্টির দোকানে এই সময় কয়েকদিন ঘি-পোয়া পাওয়া যায়। ঘি-পোয়া ছাড়া মধ্য কোলকাতার দোলযাত্রা অসম্পূর্ণ। কী এই ঘি পোয়া?
আটা, ময়দা, সূজি, চালগুড়ো, কালো জিরে, মৌরী, আখের গুড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করে ছাঁকা ঘি য়ে ভাজতে হয়। অর্থাৎ ময়দা মাখা থেকে লেচি কেটে কেটে হাতে চেপে চেপে ছান্তা দিয়ে ঘিয়ে ভেজে পাত্রে বা ঝুড়িতে রাখা হয়। আগে কলকাতার অনেক জায়গায় পাওয়া যেত কিন্তু আজকাল কয়েকটি নির্দিষ্ট বাজারে মানে বৌবাজার অঞ্চলে বিক্রি হয়। অন্যত্র কোথায় হয় জানা নেই। হয়তো হয় কিন্তু তার মান এই বৌ বাজারের মত কখনও নয়। এখানকার ঘি পোয়ার মাহাত্ম্য হল মুখে দিলে সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে যায়। ভাল ঘিয়ে ভাজা। খেয়ে মোটেই অসুবিধা হয় না।
ঘি পোয়া খাবারটি দোল উপলক্ষে তৈরি হয়ে মাত্র সাত দিন মত পাওয়া যায়। তারপর হাজার খোঁজ করলেও মিলবে না। পুরানো কলকাতার বাসিন্দাদের কাছে এই ঘিয়ের খাবারটির অতি পরিচিত। কলকাতার খাবারের জগতে এটি একটি ঐতিহ্য বলে গণ্য করা হয়।
Discussion about this post