রমজান মাসের অন্যতম সুস্বাদু শরবতের নাম হল জাফরানি শরবত। এই শরবতের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। প্রস্তুতি প্রণালীও খুব সহজ। ঢাকার ডিসেন্ট, আনন্দর মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান রমজান মাস এলেই বানাতে শুরু করে এই শরবত। গরমে এর চাহিদা থাকে এমনই যে প্রতিদিন ইফতারের আগে শুধুমাত্র একটি শাখাতেই প্রায় আশি লিটার শরবত বিক্রি হয়। স্বাদের সাবেকিয়ানা বজায় রাখতে শরবতে ব্যবহৃত জাফরান আসত সূদুর সৌদি আরব থেকে। এই রীতি আজও কিন্তু অপরিবর্তিত। তবে প্রস্তুতি প্রণালীতে রয়েছে ভারতীয় টুইস্ট। আজ্ঞে হ্যাঁ, রয়েছে কাশ্মীরের যোগ। এই রমজানে ঢাকায় না থেকেও এই স্বাদের ভাগ নেওয়া যাবে বাড়িতে বসে। গ্রীষ্মের হাঁসফাঁস গরম, এক গ্লাস ঠান্ডা জাফরানি শরবত ক্লান্তি দূর করবেই, সাথে এনে দেবে তাৎক্ষনিক সতেজতা।
গ্রীষ্মের বাজারে এখন মরসুমী ফলে ভরপুর। সাথে ঈদের জন্য সহজেই মিলছে হরেক রকমের বাদাম কিশমিশ। এসব দিয়েই অনায়াসে বানিয়ে নেওয়া যায় এই ঠান্ডা শরবত। প্রয়োজন মাত্র পাঁচটি উপকরণ। সবকটাই সহজলভ্য। দেরি না করে চটপট যাওয়া যাক জাফরানি শরবতের প্রস্তুতি প্রণালীর দিকে। এর জন্য উপকরণ প্রয়োজন এক লিটার দুধ, কয়েকটি জাফরান, যা দু’ চামচ দুধে আগে থেকে ভিজিয়ে রাখতে হবে। কুড়ি-পঁচিশটি পেস্তা, কাজু, আমন্ড বাদাম, চিনি পরিমাণ মতো আর এলাচ গুঁড়ো আধ চা চামচ।
শরবত প্রস্তুত করতে প্রথমে দশ মিনিটের জন্য সমস্ত বাদাম গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর বাদামের খোসা ছড়িয়ে এক কাপ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে বাদামের মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এবার একটি পাত্রে দুধ গরম করে নিতে হবে। দুধ যখন ফুটে উঠবে তখন বাদামের পেস্ট এবং দুধে ভেজানো জাফরান মিশিয়ে দিতে হবে। হালকা আঁচে দুধ ২০-২৫ মিনিট ধরে জ্বাল দিতে হবে, যাতে দুধের সাথে বাদাম পেস্ট ও জাফরান ভালো ভাবে মিশতে পারে। এতদূর এসেই দুধের সাদা রঙ বদলে হবে জাফরানি রঙা। এবার চিনি এবং এলাচ গুঁড়ো দিয়ে আরও মিনিট খানেক দুধ ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে জাফরানি শরবত। নামিয়ে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। পরিবেশনের সময় শরবতের উপর বাদাম কুচি ও কয়েকটি জাফরান দিলেই বাড়বে স্বাদ, জুড়োবে চোখ আর প্রাণ। এই গ্রীষ্মেই বাড়িতে থেকে উপভোগ করুন সুস্বাদু ঠান্ডা জাফরানি শরবত। ঢাকা না হয় অন্য কারণে যাবেন।
চিত্র ঋণ – Jagonews24
Discussion about this post