ভারত বৈচিত্র্যময় দেশ। সমগ্র দেশ জুড়ে এমন কিছু অদ্ভুত গ্রাম রয়েছে যার রীতিনীতি শুনলে আপনি অবাক হয়ে যেতে পারেন। এই যেমন এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে কোনও মানুষ পায়ে জুতো পরেন না। এটাই নাকি এই গ্রামের নিয়ম। এখানে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত কারোর পায়েই কখনও জুতো ওঠেনি। খালি পায়ে ঘোরাফেরা করাই এখানকার রীতি। এটা শুনতে অবাক লাগলেও এরকমই একটি গ্রাম রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে পাকালা মান্দাল এলাকায়। এই গ্রামটির নাম ভেমানা ইন্দলু।
গ্রামের বাসিন্দাদের থেকে জানা যায়, এটা তাদের অনেক পুরনো ঐতিহ্য। শুধুমাত্র তারাই না জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যখন গ্রামে আসেন তিনি নিজেও খালি পায়েই আসেন। এই গ্রামের শিক্ষিত মানুষেরাও এই রীতি মেনে চলেন। গ্রামবাসীদের কোথাও বাইরে যাওয়ার হলেও তারা খালি পায়েই যাতায়াত করেন। আর কোনও কারণে যদি তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অথবা অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় তাহলে তারা বাইরের কোনও খাবার এমনকি জল পর্যন্ত পান করেন না।
এখানকার মানুষ মূলত কৃষিকাজের উপরই নির্ভরশীল। এই গ্রামের মানুষরা বিশ্বাস করেন যে তারা ‘পালভেকারি’ গোত্রের। পালভেকারি মূলত তামিলনাড়ুর কৃষক সম্প্রদায়। গ্রামের মানুষরা ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর পুজো করেন। তাদের বিশ্বাস যে, দেবতাই সবকিছুর খেয়াল রাখবেন। এই কারণেই গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তারা কখনও হাসপাতালে যায় না। এমনকি তাদের কাউকে যদি সাপে কামড়ায় তাহলে তারা হাসপাতালে না গিয়ে সাপের পাহাড় বা নিম গাছ প্রদক্ষিণ করেন।
এই গ্রামের রেশন দোকানের মালিকের থেকে জানা যায়, “নিম্ন বর্ণের মানুষদের এই গ্রামে প্রবেশের অনুমতি নেই। গ্রামের মানুষ এসব বর্ণের মানুষদের সাথে কথা বলে না, স্পর্শও করে না। প্রতি মাসে ঋতুস্রাবের সময় নারীদের অন্তত পাঁচ দিন গ্রামের বাইরে থাকতে হয়”। এখানে গুটি কয়েক মানুষ হয়তো শিক্ষিত, তারা এইসব প্রথা ভাঙার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি প্রশাসনও প্রচার চালাচ্ছে। তবে এখানকার মানুষজনের বিশ্বাস, তাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা উচিৎ।
Discussion about this post