সিঙাড়া–বাঙালির কাছে ত্রিকোণ আকৃতির মুচমুচে একটি খাবারই নয়, যেন বৃষ্টির দিনের পরম সঙ্গী। বৃষ্টিমুখর বাঙালির সন্ধ্যেটা ঠিক জমবেই না যদি চা এর সঙ্গে ‘টা’ হিসেবে প্লেটে সিঙাড়া না থাকে। মুচমুচে খোলসের মধ্যে আলু, ফুলকপি, বাদামের পুর ঠেসে অনবদ্য এই যে সৃষ্টি তা ভারতীয়দের মন জয় করতে বেশি দিন সময় নেয়নি। তবে যদি বলি কুমড়োর পুর দেওয়া সিঙাড়া তাহলে হয়তো এতক্ষণে অনেকেই নাক সিঁটকে ফেলেছেন। কারণ যতই গুণাগুণ ভরপুর সব্জি হোক না কেন, ছক্কা, পাঁচমিশালী তরকারি বা বেসন দিয়ে ভাজা না হলে ঠিক জমে না। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, আমেরিকার মুখরোচক বাজারে জয়জয়কার ফেলে দিয়েছে কুমড়োর পুর দেওয়া ভিন্ন ধরনের এই সিঙাড়া। আমেরিকার সুপরিচিত কোম্পানি ট্রেডার জো-এর এই সৃষ্টিতে মজেছে আট থেকে আশি, সকলেই।
বাঙালির প্রিয় সিঙাড়াকে হিন্দিতে আমরা সামোসা নামেই জানি। খিলজি বংশের শাসক আলাউদ্দিন খিলজির দরবারের সংগীতশিল্পী তথা পণ্ডিত ব্যক্তি কবি আমীর খসরু তাঁর লেখায় সামোসার কথা উল্লেখ করেছেন বহুবার। সেইসময় থেকেই ভারতের বিভিন্ন রাজদরবারে এই সামোসার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তবে গতবছর আমেরিকার বাজারে এই সিঙাড়া বা সামোসা এসেছে নতুন রূপে এবং নতুন নামে– যা হল ‘মিনি স্পাইসি পাম্পকিন সামোসা’। এটি আসলে ছোটো আকারের মশলাদার কুমড়োর পুর দেওয়া সিঙাড়া।
বাজারে আসা মাত্রই অধিকাংশ আমেরিকাবাসীর মনে বেশ খানিকটা জায়গা দখল করে নিয়েছে মুখোরোচক খাবারটি। টক ঝাল যেকোনো চাটনির সঙ্গে এই তিনকোণা সিঙাড়ার মেলবন্ধন একেবারে তারিয়ে উপভোগ করছে তারা। কস্মিনকালে হয়তো যাদের কুমড়োর প্রতি কোনো টান ছিল না তারাও একবার চেখে দেখার লোভ থেকে সামলাতে পারছে না নিজেদের। তবে স্বাস্থ্যসচেতন যারা তাদের পক্ষেও খুব একটা ক্ষতিকর হবে না এটি কারণ মশলার পরিমাণ সামান্যটুকুই বটে।
এর দাম ৩.৯৯ ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩০ টাকা। ইতিমধ্যেই আমেরিকার মুখরোচক বাজারে ছোট্ট সিঙাড়ার এই প্যাকেট ‘মরশুমের সবথেকে সেরা’র তকমা পেয়েছে। ট্রেডার জো’র অনবদ্য এই সৃষ্টি সত্যিই প্রশংসনীয়। সবথেকে বড় কথা আমেরিকার বাজারে আমাদের বাঙালিদের সিঙাড়া, সে যতই হোক কুমড়োর পুর ভরা তাও যে এই জয়জয়কার এটা সত্যিই ভারতীয়দের কাছে গর্বের বৈকি!
Discussion about this post