বিরিয়ানি ভালোবাসে না এমন মানুষকে আজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কথায় আছে “ঘ্রাণেন অর্ধ ভোজনং”। আর জিভে জল আনা এই বিরিয়ানির গন্ধে পেট না ভরুক, মনটা ভরবেই ভরবে। আর যদি হয় পুরনো ঢাকার নাজিরা বাজারের হাজীর বিরিয়ানি, ব্যস্! তাহলে তো বলাই বাহুল্য। ঐতিহ্যবাহী হাজী বিরিয়ানির প্রধান শাখা হল পুরনো ঢাকার নাজিরা বাজারের বিখ্যাত এই হোটেলটি। শুধুমাত্র বিরিয়ানির লোভেই জমজমাট থাকে প্রায় ৮৩ বছরের পুরনো এই খাবারের দোকানটি। ১৯৩৯ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হাজী মোহাম্মদ হোসেন। বর্তমানে ব্যবসার হাল ধরেছেন তার তৃতীয় প্রজন্ম।
একদম রাস্তার পাশেই দাড়িয়ে থাকা নাজিরা বাজারের এই হোটেলটিতে ৫ টি টেবিলে সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২২ জনের বসার ব্যবস্থা করা রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে মাঝরাত পর্যন্ত খোলা থাকে দোকানটি। কোনো কোনো দিন হয়তো ভিড়ের জন্য রাত দুটো অবধিও খোলা রাখা হয়। কত দূরদূরান্ত থেকে বিরিয়ানি প্রেমীরা এখানে আসেন সুস্বাদু বিরিয়ানির টানে। তবে অন্যান্য বিরিয়ানির থেকে হাজী বিরিয়ানির স্বাদ একটু আলাদা। মূলত পোলাওর চালের সঙ্গে খাসির মাংসের ছোট টুকরোর যুগলবন্দি। সঙ্গে মসলাপাতি। কিন্তু হাজীর বিরিয়ানির রেসিপি ৮৩ বছর ধরেই একেবারে ‘সিক্রেট’। আর এখন এক প্লেট বিরিয়ানির দাম ২০০ টাকা।
নাজিরা বাজারের শাখাটি ছাড়াও এখন ৪২, বেচারাম দেউরীতে রয়েছে তাদের আরও একটি শাখা। এটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে খোলা হয়েছে। তবে বাজারের শাখাটি রয়েছে একদম পুরনো আদলেই। এমনকি বিরিয়ানি পরিবেশন করার পদ্ধতিতেও রয়েছে পুরনো রীতির ছোঁয়া। সেই পুরনো ঐতিহ্য মেনে এখনও কাঁঠালপাতায় বিরিয়ানি পরিবেশন করা হয় এখানে। স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বান্ধব হবে ভেবেই তাদের এই রেওয়াজ। এই কাঁঠালপাতা তাদের নিজেদের লোকেরাই নিয়ে আসেন। সেটিকে পরিষ্কার সুতা দিয়ে ভালো করে প্যাঁচিয়ে পরিবেশন করেন ক্রেতাদের। এভাবেই বছরের পর বছর নিজেদের ঐতিহ্যকে বজায় রেখে ক্রেতাদের মন এবং পেট ভরিয়ে চলেছেন নাজিরা বাজারের ৮৩ বছরের পুরনো এই শাখাটি।
Discussion about this post