ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষকদের কাছে কি শুধু পুঁথিগত শিক্ষাই পাচ্ছেন নাকি জীবনের শিক্ষাতেও আলোকিত হচ্ছেন তারা? এই প্রশ্নই আমরা করেছিলাম কিছু শিক্ষককে। তাঁরা বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িয়ে, কেউ হয়তো শিল্পী কিংবা লেখ। কেউ বা খুলেছেন স্টার্ট আপ। কেউ হয়তো পদ্মশ্রী প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক তো কেউ শিক্ষকতার পাশাপাশি ছাত্রদের যুক্তির পথে চলার প্রেরণা দেন। সেই দেশ গড়ার কারিগররা ডেইলি নিউজ রিলের প্রশ্নের উত্তরে কী জানালেন?
সুজিত চট্টোপাধ্যায় (সদাই ফকির), পদ্মশ্রী প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক – আমাদের আগে জানতে হবে শিক্ষা কী? শিক্ষা নিয়ে নানা চিন্তাবিদ তাদের মতো করে সংজ্ঞা দিয়েছেন। আমি গান্ধিজীর শিক্ষা সংক্রান্ত ভাবনাটুকুই উল্লেখ করছি। শিক্ষা নিয়ে গান্ধিজীর মূল ভাবনার বিষয়টি ছিল শরীর এবং মনের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ। এই উক্তিতেই পুঁথিগত শিক্ষা এবং জীবনের শিক্ষার ফারাক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পুঁথিগত বিদ্যাই যে জীবনের শিক্ষা হতে পারে না তার দৃষ্টান্ত আমরা পেয়েছি দেশের কিছু মহান ব্যক্তিত্বের জীবন থেকে। তার মধ্যে রামমোহন, গান্ধিজী, সুভাষচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, এ পি যে আব্দুল কালামের মতো মহান ব্যক্তিরা যেমন আছেন, তেমনই রয়েছেন দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত অগণিত সাধারণ মানুষ। এনারা জীবন থেকে শিক্ষার প্রকৃত নির্যাসটুকু তুলে নিতে পেরেছিলেন।
এক টিভি শোতে এ পি যে আব্দুল কালাম বাচ্চাদের প্রশ্ন করেন, বলো তো পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী কে? কেউ এর সদুত্তর দিতে না পারলে তিনি নিজেই উত্তর দিয়েছিলেন, “একজন শিশু, যে সব কিছু জানতে চায়।” এটা হয়তো ঠিক পুঁথিগত শিক্ষা আমাদের জীবনে ভিত নির্মাণ করে, যার ওপর গড়ে ওঠে জীবন। কিন্তু তার বিকাশ ঘটায় জীবনের শিক্ষা। তবে বর্তমান সমাজে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় পুঁথিগত শিক্ষাকেই। জীবনের শিক্ষা যেন ক্রমশঃ গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে।
আমার পাঠশালার নাম সদাই ফকিরের পাঠশালা। ২০০৪ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পর এটি চালু করি। বর্তমানে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৩০০-এরও বেশি। দশম শ্রেণী থেকে স্নাতক স্তরের ছেলেমেয়েরাই এর পড়ুয়া। তাদের বই পড়ানোর পাশাপাশি দেওয়া হয় জীবনের শিক্ষাও। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের জন্য আর্থিক সাহায্য করাই হোক কিংবা দুঃস্থ মেধাবী ছেলেমেয়েদের পাশে থাকা, এসব জীবনমুখী শিক্ষাও দেয় সদাই ফকিরের পাঠশালা। তাই বলা যায়, বর্তমান সময়ের ভাত-কাপড় সংস্থানের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বেশি প্রয়োজন জীবনের শিক্ষার। ঠিক হোক, ভুল হোক, সদাই ফকিরের পাঠশালার মূলমন্ত্র এটাই, “কিছু নাহি ভয়, জানি নিশ্চয়/ তুমি আছো, আমি আছি।”
সিধু, ক্যাকটাস, সঙ্গীত শিল্পী – শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি তো সারা পৃথিবী জুড়েই পাল্টেছে। পাল্টে যেটা হয়েছে, পুঁথিগত শিক্ষার বাইরে নানাবিধ মানসিক বিকাশ, সেটাই আমার বেশি জরুরী বলে মনে হয়। জীবনের শিক্ষা তো বয়স এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে। ক্লাস ফোরে তো আর জীবনের শিক্ষার দরকার নেই, কিন্তু তার মানসিক বিকাশটা দরকার। কাজেই আমার মনে হয় বিশ্ব জুড়ে যে পরিবর্তন, তার ছোঁয়া আমাদের ভারতেও এসেছে। আমাদের রাজ্য কিংবা শহরেও এসেছে। তবে গ্রাম বা মফঃস্বলে জীবনমুখী শিক্ষার ধারা খুব একটা চর্চা হচ্ছে না। আশা রাখি আগামী দিনে সেই জায়গাগুলিতেও আমরা আরও পরিবর্তন দেখব। একটি বিসিএ কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে একটি অনলাইন ইন্টারেক্টিভ সেশন করলাম। অথচ আমার সঙ্গে এই বিষয়ের সরাসরি যোগ নেই। আমি আমার মতো করে আমার অভিজ্ঞতার কথা তাদের শেয়ার করব, তারা তাদের মতো আমাকে প্রশ্ন করবে। যে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন পড়তে এসেছে তাকে অন্য কিছু অফার করা, এটাও তো শিক্ষার জীবনমুখী দিক।
প্রিয়াণ, সঙ্গীত এবং কণ্ঠ শিল্পী, স্কুল শিক্ষক – এত স্বল্প পরিসরে বিষয়টি ব্যক্ত করা সত্যি বেশ কঠিন কিন্তু তবুও একজন শিক্ষক (লিঙ্গ বৈষম্যে শিক্ষিকা বললাম না) হিসাবে এটা আমার মনে হয় যে হ্যাঁ বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে মূলত পুঁথিগত শিক্ষাই পেয়ে চলেছে। যদিও সেটার জন্য শিক্ষকরা একেবারেই দায়ী নয় বরং শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পাঠক্রমের কারিকুলামের জন্য অনেক বেশি নিযুক্ত। তবে একদম যদি বর্তমান কারিকুলাম বিবেচনা করি তাহলে কিন্তু আমার নজরে পড়েছে যে সেখানে ব্যবহারিক দিক এবং জীবনের অনেক প্রয়োজনীয় দিক কিন্তু বিষয়ভিত্তিক সমগ্র সিলেবাসে রয়েছে। চাইলেই যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা ও বিবেচনার সাথে সেগুলোকে ছাত্র ছাত্রীর উপর প্রয়োগ করা যায়। কিন্তু আসল সমস্যা সময়। মানে যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করানোর যে ইঁদুর দৌড় আমাদের দৌঁড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় সেখানে শিক্ষক , ছাত্র-ছাত্রী সবাই অসহায়। তবে তার মধ্যেও কিন্তু এমন বেশ কিছু শিক্ষক রয়েছেন যারা সত্যি তাদের পেশা নয় আদর্শকে এখনও বহন করে চলেছেন।
আর একটি কথা, সেটা হলো এই যে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের প্রচ্ছন্নভাবে দায়ী করা হচ্ছে যে তারা বসে বসে বেতন পাচ্ছে। এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি এবার বন্ধ হওয়া দরকার। প্রথমতঃ এই ধরণের নিকৃষ্ট মানসিকতা সমাজকে নিছকই দূষণ করছে। আর তার থেকেও বড় কথা আমার তো মনে হয় ছাত্ৰ-ছাত্রী এই যে একটু নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারছে সেটা তো এই প্রজন্মের ক্ষেত্রে কম পাওনা নয়! একটা অতিমারী বা মহামারী যাই হোক না কেন সেটার ভয়ঙ্করতা ও বাস্তবতা তো তাদের বোধগম্য হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আর সেটা শুধু শিক্ষকরা কেন? পরিবার, সমাজ এদেরও তো অনেক বড় ভূমিকা থাকে শিক্ষকতায়। তাই এই যে করোনা আবহে অনলাইন ক্লাসের বাড় বাড়ন্ত; আমি একেবারেই সেটা সমর্থন করিনা। বরং সরকার যে গঠনমূলক, এক্টিভিটি টাস্ক ছাত্র ছাত্রীর কাছে সরকারী স্কুলগুলো থেকে মিড ডে মিলের সময় পৌঁছিয়ে দিচ্ছে সেটা অসম্ভব বুদ্ধিদীপ্ত ও উপযোগী আহার একজন শিক্ষার্থীর। এতে গ্রাম শহর সমস্ত স্তরেই ছাত্র ছাত্রীরা উপকৃত আমার মনে হয়। কিন্তু শিক্ষকদের ‘কাজ’ দেখাতেই হবে নচেৎ তাদের পেশা মিথ্যে, এই মানসিকতা নিয়ে যে সব স্কুল ও স্কুল কর্তৃপক্ষ দিনে সাত আট ঘণ্টা অনলাইনের নাগপাশে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের বেঁধে নিষ্পেষিত করছে, তার কুফলকে ভোগ করবে? আমরাই ভোগ করবো। যেটা আমরা জেনেও এড়িয়ে যাচ্ছি সবাই। এই অনলাইন শিক্ষার যে মারাত্মক মনস্তত্বগত ও সামাজিক কু-পরিণাম……. কেউ ভাবছে কি! অনলাইন ক্লাস নিশ্চই করানো যেতে পারে কিন্তু তার আগে সেটা সঠিকভাবে বিবেচনা করে প্রয়োগ করা উচিত শিক্ষা মাধ্যমের। নচেৎ আমরা সেই পুঁথিগতই রয়ে যাবো, আর জীবনের শিক্ষা “বোকা বাক্স, কম্পুদানব আর স্মার্ট এর বিপরীতে ভোঁতা-ফোনেই” আটকে থাকবে!
সোমঋতা চক্রবর্তী, অন্যতম কর্ণধার, কৈরভী – আমি শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত নই, তবে আমার দাদু রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এই পেশার সন্মান আর দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুটা বুঝি। আমাদের জীবনে বাবা-মা’ই আমাদের প্রথম শিক্ষাগুরু। তবে আমার মনে হয় প্রকৃত শিক্ষা মানুষের জীবন সংগ্রাম আর সময়ই দেয়। আমি আর আমার সহযোদ্ধা রাহুল যখন আমাদের কৈরভী বুটিক শুরু করি, আমাদের কাছে জীবন একটু আলাদা ছিল। পরে অভিজ্ঞতার সঙ্গে অনেক জ্ঞান অর্জন করি। মানুষকে নতুন করে চিনি আমরা। আমরা একটা টিম হিসেবে কাজ করি। আমাদের টিমে রেম, দীপ, পাপিয়া অপরিহার্য অংশ। সবাই এক সঙ্গে প্রতি দিন লড়ছি আর শিখছি। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু ই বলতে পারি,শুধু স্বপ্ন দেখলে চলবে না, সেটা বাস্তবায়িত করার জন্যে একটা বড় লড়াই লড়তে হবে, ভেঙে পড়লে চলবে না। নিজের কাজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আর তাকে ভালোবাসতে হবে। স্বপ্ন যত বড়ো হয় সেটাকে পাওয়ার লড়াইও তত বড়ো হয়। আমি আর রাহুল আমাদের পুরো টিমকে সঙ্গে নিয়ে সেই লড়াইটাই লড়ছি। আর এই লড়াই টা ই আমাদের দুজনের জীবনের একটা বড়ো শিক্ষা।
মহঃ সাইফুল ইসলাম, লেখক, বাংলাদেশ – আচ্ছা আমি যদি বলি নেতাজি সুভাসচন্দ্র বোসের সময়কার কথা তখন কি মানুষ ধর্ম নিয়ে এতোটা অসহিষ্ণু ছিলো নাকি বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় মত্ত ছিলো? আমি যদি বলি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ৭ কোটি বাঙালি ধর্ম রক্ষায় মুক্তিযু্দ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল নাকি বাঙালি ও বাংলার স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রক্ত দিয়েছিল? একটা সময় ছিলো বাঙালি শিক্ষিত সমাজ বাংলা ভাষা ও বাঙালীয়ানাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে মরণপণ সংগ্রাম করেছে কারণ তখনকার শিক্ষক এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ছিলো গুণগত মানসমৃদ্ধ।আজকালকার মতো স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং বিজনেস গাইড বই সাজেশন এসবকে প্রশ্রয় দেয়নি তৎকালীন শিক্ষক সমাজ। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম, নিয়মানুবর্তিতা, পরমতসহিষ্ণুতার মতো নৈতিক গুণাবলী শিক্ষা দিতেন বলেই আট ক্লাস পরেই নজরুল হয়েছিল কবি। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষার নামে চলছে সার্টিফিকেট লাভের কানামাছি খেলা এই স্কুল না ঐ স্কুল তারপর ভর্তি যুদ্ধ। শিক্ষকরা গুণগত শিক্ষা প্রদানে পিছিয়ে আছে বলেই বাড়ছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, উগ্রবাদ,বিভেদ বৈষম্য আর হিংস্রতা।
অস্ট্রেলিয়ার মারডক ইউনিভার্সিটির সাসটেইনেবল অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের সহযোগী অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন যিনি শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে ২০১৬,২০১৮,২০১৯ এবং ২০২০ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অস্ট্রেলিয়ার সেরা শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন একজন সফল শিক্ষক হিসেবে। এই মোয়াজ্জেম হোসেনও যখন বাংলাদেশে ছিলেন তখন নবম শ্রেণীতে গণিতে ফেল করেছিলেন কিন্তু তার স্কুল শিক্ষক বাবা গণিতকে উপভোগ করতে শিখিয়েছিলেন যার জন্য পরবর্তীতে তার এই সফলতা। মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন পড়ালেখাকে কখনোই পাঠ্যবইয়ের মধ্যে বেঁধে রাখা উচিত নয়। এর বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করার চেষ্টা করুন, যেন শিক্ষাটা তাঁরা জীবনে কাজে লাগাতে পারেন, বিশ্ববাজারের জন্য তৈরি হতে পারেন। কিন্তু আমাদের ভারতবর্ষে হচ্ছে উল্টোটা সারাদিন একগাদা বইয়ের বোঝা কি বুজলাম না বুজলাম সেটা মুখ্য নয় মুখস্থ বিদ্যায় আমাকে পরীক্ষার খাতা ভর্তি করে পাশ যে করতেই হবে…..
অরূপ কুমার দে, শিক্ষক – শিক্ষকের নিজ বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান, অন্যান্য বিষয়ে অল্প বিস্তর ধারণা চাই। এখন চাইলেই হাতে তথ্য, মডেল, ছবি, অ্যানিমেশন হাজির। ব্যবহার করতে চাই অগাধ বোধ, প্রজ্ঞা। জ্ঞান-অজ্ঞান, শিক্ষা-অপশিক্ষা-অশিক্ষা-কুশিক্ষা, সত্যদর্শন-ভ্রান্তদর্শন সব একসাথে মিশে আছে। তফাৎ বোঝাতে হবে। শিক্ষককে প্রকৃত শিক্ষিত হতেই হয়, নইলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সত্যের পথ হারাবে। দেশ যাবে ‘সনাতন নিদ্রায়’। সিলেবাসে জীবনের পাঠ থাকা উচিত। সিলেবাস রচয়িতাদের প্রকৃত শিক্ষিত, উদার, কুসংস্কারমুক্ত, বিজ্ঞানমনস্ক, মানবিক হতে হবে। শিক্ষকদেরও তাই। সিলেবাস শেষ করতেই হবে। সেটাও শিক্ষা। আবার সুকুমারমতি শিক্ষার্থীদের জীবনবোধের পাঠ দিতে হবে। শেখাতে হবে, “ভালো মন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে।”; “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।”
অলৌকিক বিশ্বাসের অচলায়তন ভেঙে যুক্তিবোধ আর আত্মবিশ্বাসের পাঠ দিতে হবে। বন্ধুত্ব, ভাতৃত্ববোধ, নারীর প্রকৃত মূল্যায়ন, আত্মনির্ভরতার পাঠ দিতে হবে। শিক্ষার্থীর সব সমস্যা জানতে হবে, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং। উৎসাহ দিতে হবে, জীবনের মূল্য বোঝাতে হবে, কাজ করা ও লক্ষ্যপূরণের মাধ্যমে জীবনকে উপভোগ এবং ব্যর্থ হলে ঘুরে দাঁড়ানো শেখাতে হবে। অতীতের বোঝা থেকে ওদের দূরে রাখতে হবে। সত্যিকারের ভালোবাসা দিতে হবে ওদের। ভালো শিক্ষক, শিক্ষার্থীর জানার ইচ্ছাকে উস্কে দিয়ে অনুসন্ধিৎসু করেন। শুধু সিলেবাস শেষ করেই থেমে থাকেন না, আগামী বসন্তে অরণ্যে মিশে যাওয়ার হদিস দেন। হ্যাঁ, প্রকৃত শিক্ষক সিলেবাস শেষ করার পাশাপাশি জীবনের বোধের পাঠ দেন। আর হ্যাঁ, ছাত্রের গবেষণা টুকে বই লেখা রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর নয়, শিক্ষক দিবস হওয়া উচিত ২৬ সেপ্টেম্বর, বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে।
Discussion about this post