গত সোমবার থেকে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। আর এই লক ডাউনের ফলে সব থেকে বেশি অসুবিধায় পড়েছে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষেরা। মূলতঃ তারা দিন আনি দিন খাই সম্প্রদায়ের। লকডাউনের ফলে হাতে কাজ নেই, তাই জুটছে না রোজকার প্রয়োজনীয় খাবার টুকুও। এই অবস্থায় তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে একদল তরুণ ছাত্রসম্প্রদায়। ফেসবুক নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কোয়ারেন্টাইন স্টুডেন্ট ইয়ুথ নেটওয়ার্ক’ নামে একটি গ্রুপের সদস্য তাঁরা। এখন ঘরে বন্দী তাও সুযোগ পেলেই সমাজের ‘এই দিন আনি দিন খাই’ মানুষদের জন্য বরাবরই তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এভাবেই কলকাতার রানিয়া অঞ্চলে আটকে পড়া কিছু শ্রমিকের মুখে খাবার তুলে দিতেও যথেষ্ট তৎপর উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
গ্রুপের অন্যতম সদস্য স্বাগতর কথায়, গত শুক্রবার ফেসবুক মারফত তাঁরা জানতে পারেন কলকাতা পুরসভার রানিয়া বিদ্যাসাগর পল্লী অঞ্চলে কিছু শ্রমিক আটকে পড়েছেন। তারা মূলতঃ বিহারের বাসিন্দা। কাজের সূত্রে কলকাতা এসেছিলেন। এলাকাটিতে মোট ১৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক ও ট্যাক্সিচালকের বাস। তাদের মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে। খাবারের অভাবে অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটছে তাদের। প্রশাসনের তরফে মাত্র সাত দিনের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাই কিছু সাধারণ ছাত্র-যুব সিদ্ধান্ত নেন তাদের হাতে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস তুলে দেবেন।
রবিবার বিকেল ৫ টা নাগাদ বাঁশদ্রোণীর কংগ্রেস নগরে তাদের হাতে রেশনের কিছু জিনিস তুলে দেন তাঁরা। তার মধ্যে ছিল আটা, চাল, ছাতু, তেল, পেঁয়াজ এবং আলুর মতো নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস। রানিয়ায় বসবাসকারী এক ট্যাক্সিচালক এসে বাকি শ্রমিকদের জন্য এই জিনিসপত্রগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যান। উদ্যোগটিকে সফল করতে সমাজের সাধারণ মানুষদের কাছে সাহায্যও চান এই ছাত্র-যুবরা। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরাও। এই উদ্যোগটির মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের মুখে হাসি ফোটালেন তাঁরা। সাহায্যের ফলে বেশ উপকৃতও হয়েছে সেই আটকে পড়া মানুষগুলির পরিবার। তারাও এই দামাল ছেলেমেয়েদের প্রশংসা এবং আশীর্বাদে ভরিয়ে দেন।
Discussion about this post