রেস্তোরাঁয় খাবার পরিবেশন একটা বেশ বড়সড় শিল্প হয়েই দাঁড়িয়েছে বর্তমানে। খাবারের হরেকরকম স্বাদ, হরেকরকম সাজানো, হরেকরকমের রূপ-রস-গন্ধ। আর এই সমস্তের মধ্যেই রয়েছে নিখুঁত, নির্ভুল পরিবেশনের কায়দা। আমাদের দেশে তো বটেই, বিদেশেও আকছাড় দেখা যায়, যে খাবারে নুন বা মিষ্টি কম হলে, খাবার রান্নার ধরণ পছন্দ না হলে রেস্তোরাঁর পরিবেশক, বা শেফকে ডেকে অনুযোগ জানানো হয়। কারণ, গ্রাহক নাকি সর্বদাই সঠিক। কিন্তু এই নিয়মের উল্টোদিকে চলছে জাপানের এক রেস্তোরাঁ।
জাপানের টোকিও শহরের এই রেস্তোরাঁতে খাবার অর্ডার করলে সেই খাবার মেলেনা, বদলে মেলে অন্য কোনো খাবার, যা আপনি মোটেও অর্ডার করেন নি। মনে করুন আপনি অর্ডার করলেন র্যামেন স্যুপ, আর আপনাকে দিয়ে গেল সুশি। কিন্তু, অবাক কান্ড মানুষ এসবে মোটেই রেগে যায় না, রেগে চিৎকার করে লোক জড়োও করেনা। কেন? কারণ এই রেস্তোরাঁর পরিবেশকরা সকলেই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। অর্থাৎ সকলের মনই কমবেশি ভুলো। কেউ কিছু মনে রাখতে পারে না। ফলে উদোর পিন্ডি চাপে বুধোর ঘাড়ে।
রেস্তোরাঁর নাম ‘রেস্টুর্যান্ট অব মিস্টেকেন অর্ডারস’। একেই জাপান তার জনসংখ্যায় বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যাধিক্যে আক্রান্ত। তারসঙ্গে আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে জাপানে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবেন। এরই মধ্যে সোশ্যাল এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে এই সংস্থা খোলা হয়েছে। যেখানে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধারা খাবার পরিবেশন করছেন সাধারণ মানুষকে। আর সেই খাবার ভুলভাল হওয়ার পরেও তাঁদের নিয়ে মানুষের অসন্তোষ নেই। বরং ডিমেনশিয়া নামক রোগটি নিয়ে তৈরি হচ্ছে সচেতনতা। তৈরি হচ্ছে সহানুভুতি, সহমর্মিতাবোধ।
Discussion about this post