‘”শীতের ভোরের বেওরা পুকুর টুসু গানের সারি নতুন চালের ভাঁপা পিঠে চাকলি আহামরি।” জাঁকিয়ে শীতে এবার পিঠে পুলিরই দিন বটে। আর পিঠের কথা বলতে গেলেই যেটা প্রথমেই মনে আসে তা হলো গুড়। ঝোলা গুড়, নলেন গুড়, পাটালি গুড় ইত্যাদি রকমের খাঁটি সুস্বাদু গুড়ের ঠিকানাই রইল আপনাদের জন্য। নদিয়ার মাজদিয়ার খেজুর গুড় যা রপ্তানি হয় বিদেশেও। ভেজালের দুনিয়ায় নির্ভেজাল এই গুড় বিক্রি করে যথেষ্ট পসার গুড় ব্যবসায়ীদের। গত বছর মন্দার বাজার হলেও এবারে অবস্থা অনেকটাই ভালো।
জমে উঠেছে কৃষ্ণগঞ্জ মাজদিয়ার গুড়ের হাট। বিকেলে গাছ কেটে হাঁড়ি ঝুলিয়ে ভোরে তা সংগ্রহ করেই জ্বাল দিচ্ছেন বাড়িতে। তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড় অর্থাৎ কিনা নলেন গুড় আর পাটালি গুড়। বর্তমানে মাজদিয়া গুড়ের হাটে নলেন গুড় কিলো প্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, আর পাটালি গুড় ২০০ টাকা কিলো।
এক বিন্দু চিনি নাকি ভালো গুড়ের শত্রু! চিনিবিহীন গুড় প্রস্তুত করতেও পিছুপা হয়নি মাজদিয়ার গুড় ব্যবসায়ীরা। দুই বছর আগে থেকেই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিট অব প্যাকেজিংয়ের সহায়তায় টুথপেস্টের মতো টিউব-বন্দি নলেন গুড় নিয়ে বাজার ধরতে নেমেছিল রাজ্যের খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ। মাজদিয়ার ‘শ্রীকৃষ্ণ নলেন গুড় উৎপাদক সমিতি’ নামে এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১২ হাজার টিউবে নলেন গুড় ভরার বরাত দিয়েছিল খাদি। দু’টো শীত পার করেই বারো হাজার থেকে লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছেছে লাখে। ‘বিশ্ববাংলা’র স্টল থেকে টিউব নিয়ে যাচ্ছেন নলেনের নেশা ধরা বিদেশিরাও। চাহিদা এতো বেড়েছে যে সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। শীতের বাকি থেকে যাওয়া মরসুর জুড়ে সুখের মুখ দেখবে বলেই আশা ব্যবসায়ীদের মনে।
Discussion about this post