অফার পেতে কার না ভাল লাগে! আজকাল কিছু কিনলেই তার সাথে লেজুড়ের মতো জুড়ে আছে অফার। ‘এটা কিনলে ওটা ফ্রি’ বা ‘তিনটে কিনলে একটি বিনামূল্যে’, অফারের ছড়াছড়ি চারপাশেই। কোনো উৎসব বা পালা-পার্বণ তো বটেই, এমনকি তেমন কোনও বিশেষ দিন ছাড়াও অফারের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে আশেপাশে গজিয়ে ওঠা শপিং মলগুলি। অফারের লোভেই দোকানে দোকানে ভিড় জমান বহু ক্রেতা। খবরের কাগজ হোক বা টেলিভিশনের পর্দা, অফারের বিজ্ঞাপন চোখে পড়বেই। এমনকি ইদানিং অনলাইন শপিং অ্যাপগুলিতেও তার ঝলক নজর এড়ায় না।
তবে এই অফারের প্রথা কিন্তু খুব আধুনিক, ব্যাপারটি কিন্তু এরকমও নয়। বরং বহুকালের পুরোনোই বলা চলে। সেই প্রসঙ্গেই বলা যাক একটি বিজ্ঞাপনের কথা। চল্লিশের দশকের কলকাতা ৬১, ম্যাকলয়েড স্ট্রিটে অবস্থিত হোল্যান্ড ওয়াচ কোংয়ের ঘড়ির বিজ্ঞাপন সেটি। সেই কোম্পানির ঘড়ির বিশেষত্ব হল তার গোল আকৃতি। ঘড়ি কোম্পানির দাবি ছিল ঘড়িগুলি দেখতে সুন্দর ও তার ব্যান্ডগুলি সহজে ছিঁড়ে যায় না। ৬ বছরের জন্য ঘড়ির গ্যারান্টিও ছিল। তবে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছিল ঘড়ি বিক্রির অফার। এই ঘড়ি তিনটে একসঙ্গে কিনলে ডাক মাশুল ছিল এক্কেবারে বিনামূল্য। তিনটি ঘড়ি কেউ একসঙ্গে কিনলে বিনা খরচে তার বাড়ি ঘড়ি পৌঁছে দেওয়া হত। কাজেই দেখা যাচ্ছে শুধু হাল-আমলেই নয়, অফারের চমকে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলত তখনকার দিনেও। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে মানুষের চিন্তাধারাতেও ‘অফার’-এর ধারণা ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। আজকের দিনের মত অফারের ছড়াছড়ি না থাকলেও, এভাবেই ফ্রি কিংবা বিনামূল্যে পাওয়া জিনিসের হুজুগে লোক টানার ফন্দি-ফিকির খুঁজে নিত কলকাতার বহু ব্যবসাদার কোম্পানিই।
Discussion about this post