শীত আর বসন্তকাল খাদ্যবিলাসীদের কাছে শুধু একখানা ঋতুই নয়, অপার স্বস্তির সময়। প্রাতঃরাশে জমাটি জলখাবার আর দুপুরে কব্জি ডুবিয়ে ভূরিভোজ! শীতকাল মানেই মন খালি পিকনিক পিকনিক করে ওঠা। আর বাজারে আসে নলেন গুড়, শীতের সবজি। শীতকালের নলেন গুড়ের রসগোল্লা, মাখা সন্দেশ আর মোয়া। শীতকালে এই খাবারগুলো না খেলে আর কি করলেন! আর ভরা বসন্তেও কিছুটা হলেও থেকে যায় এই উৎসবের রেশ। গরমকালের সব্জির একঘেয়েমী কাটাতে বাজারে নানারকমের সব্জির সম্ভার তো আছেই। তার মধ্যে অন্যতম একটি হল কড়াইশুঁটি।
কড়াইশুঁটি অনেকটা ওই ‘সর্বঘটের কাঁঠালি কলা’ র মতন। প্রতিদিনের বাজারে কিছু থাক আর না থাক কড়াইশুঁটি কিন্তু থাকবেই। তবে তা দিয়ে তৈরি খাবার দাবার কিছু কম নেই। এই যেমন ধরুন কড়াইশুঁটির কচুরি। রবিবারের সকালে এই কচুরি আর ছোট আলুর দম না হলে ছুটির আমেজটাই ফিকে মনে হয়। তবে এই বসন্তকালীন সব্জি আর মিষ্টির মধ্যে যদি একটা মিষ্টি বন্ধন তৈরি করা যায় তাহলে কেমন হয় বলুন তো? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, কড়াইশুঁটির সন্দেশ। একেবারে খাঁটি সবুজ মিষ্টি। খানিকটা সেই গন্ধরাজ ট্রেন্ডে গা ভাসানোর মত আর কি! চলুন জেনে নিই মিষ্টির রেসিপিটি।
প্রথমেই উপকরণ হিসেবে নিয়ে নিন- কড়াইশুঁটি- ১৫০ গ্রাম, খোয়া ক্ষীর- ১০০ গ্রাম, চিনি- ৭৫ গ্রাম, আমন্ড বাদাম- ৮-১০টা, গুঁড়োদুধ- ২ চামচ, ঘি- ৪ চামচ, কনডেন্সড মিল্ক- ৫ চামচ, এলাচগুঁড়ো- সামান্য। এসবকিছু জোগাড়ের পর প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হল কড়াইশুঁটিগুলো ছাড়িয়ে প্রথমে গরম জলে সিদ্ধ করে নিন। তারপর মিক্সারে সিদ্ধ হওয়া কড়াই গুলোকে ভালো করে পিষে নিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন ( প্রয়োজনমতো জল যোগ করা যেতে পারে)। এবার একটি কড়াইয়ে তিন চামচ ঘি গরম করে কড়াইশুঁটির বাটাটা দিয়ে অন্তত মিনিট পনেরো ভালো করে নাড়তে থাকুন। তার সাথে খোয়া ক্ষীর দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে গেলে গুঁড়ো দুধ আর কনডেন্সড মিল্ক ভালো করে মেশান। শেষে চিনি ও পরিমাণ মতো এলাচগুঁড়ো দিয়ে ভালো নাড়তে থাকুন। সবকিছু ভালো ভাবে মিশে গেলে গ্যাস বন্ধ করে নামিয়ে নিন ও সামান্য ঠান্ডা হতে দিন। এবার একটি থালায় ঘি মাখিয়ে মিশ্রণটি হাত দিয়ে সমান করে দিন। গার্নিশিংয়ের জন্য আমন্ড বাদাম কুচি করে কেটে ওপর দিয়ে ছড়িয়ে ফ্রিজে ২ ঘণ্টা রেখে দিন। ঠান্ডা হলে যেমন খুশি আকারে কেটে নিলেই ব্যাস! আপনার কড়াইশুঁটির সন্দেশ রেডি।
এই স্বল্পকালীন বসন্তে বাড়িতে অতিথি এলে সকালে জলখাবারে বা রাতে, অতিথি আপ্যায়ন হোক এই সন্দেশের সাথে। কড়াইশুঁটির কচুরি, আলুর দম আর শেষ পাতে থাকুক কড়াইশুঁটিরই সন্দেশ।
Discussion about this post