কলকাতা শহরের ঘুম ভাঙে একটু একটু করে ব্যস্ততার স্পর্শ নিয়ে। আর তেমনই সকালে থাকে ব্রেকফাস্টের হিসেব। কী খাওয়া যায় ভাবতে ভাবতেই মেলে ‘আদি হরিদাস মোদকে’র কচুরির ঠিকানা। বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাবারের তালিকায় যার স্থান। তবে এখানকার কচুরিতে রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। এ কচুরি পরিবেশন করা হয় কলাপাতায়।
শ্যামবাজার কলকাতাবাসীর অত্যন্ত পরিচিত জায়গা। সেই শ্যামবাজারের নেতাজী মূর্তির ঠিক উল্টোদিকে এই দোকান। শোনা যায়, স্বয়ং নেতাজী থেকে শুরু করে রানী রাসমণি, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, গিরিশ ঘোষ, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজা রামমোহন রায়ের মত গুণী মানুষেরা এ দোকানের কচুরির স্বাদ গ্রহণ করেছিলেন।এ দোকান শুরুর সময়টা ১৭৮০।ইতিহাস কথা বলে এই দোকানে। আদি হরিদাস মোদকে’র দোকানের বয়স আজ প্রায় ২৫০ বছর।
তবে শুধু কচুরিতে কি আর রসনাতৃপ্তি ঘটে! তার সাথে চাই কোনো প্রকার তরকারি। আর এই দোকানে কচুরির সাথে পরিবেশন করা খোসা সমেত আলুর তরকারি। প্রায় ছয় প্রজন্ম ধরে চলছে এ দোকানের ব্যবসা। কিন্তু এতগুলো দিনেও রমরমার কোনো খামতি নেই। উত্তর কলকাতাকে এই কচুরির দোকান ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। দোকানের ভেতরে ঢুকে দেখা যাবে সারি সারি কাঠের বেঞ্চ। রঙ চটে যাওয়া দেয়াল যেন সাক্ষী দিচ্ছে প্রাচীনতার।
এ দোকানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সত্যজিৎ মোদক। সেই থেকে চলা দোকানটির বর্তমান কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ মোদক। কালী বাড়ির উল্টো দিকের এই দোকানে কচুরির দামও ভীষণ কম। প্রতি এক পিস লুচি মাত্র ৬ টাকা, আর কচুরির দাম প্রতি পিস মাত্র ৭ টাকা। শুধু এতেই শেষ নয়, তার সাথে আছে কালাকাঁদ, জিভে গজার মত সুস্বাদু মিষ্টি। তবে যেটা মনে রাখতে হবে শ্যামবাজার মোড়ে দুটো হরিদাস মোদকে’র দোকান। তার মধ্যে যেটা সবচেয়ে পুরনো সেটাই আদি হরিদাস মোদকে’র কচুরির একমাত্র ঠিকানা।
Discussion about this post