ফুজিকাওয়াগুচিকো, জাপানের ইয়ামানাশি প্রিফেকচারে অবস্থিত একটি শহর। কিন্তু, এ শহর, যে সে শহর নয়। শহরটির অবস্থান হল বিখ্যাত মাউন্ট ফুজির উত্তর পাদদেশে। মাউন্ট ফুজি জাপানের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তো বটেই, এবং বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির মধ্যে একটি। ফলে, ফুজিকাওয়াগুচিকো শহরটি জাপানের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। আস্ত শহরটিই মূলত গড়ে উঠেছে ট্যুরিজমকে কেন্দ্র করে। অথচ এই ট্যুরিজমকে স্থগিত করার প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার!
এ হেন জনপ্রিয় জায়গাটির পর্যটন কেন বন্ধের মুখে? কারণ, পর্যটকদের বিশৃঙ্খলা। অনিয়ন্ত্রিত গাড়িঘোড়ার প্রবেশ, ট্রাফিক নিয়ম না মানা, যথেচ্ছ বর্জ্য পদার্থ ফেলে পরিবেশ দূষণ করা এবং নিয়মিত পথ দুর্ঘটনার অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পর্যটনের দ্বারা অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হলেও, মানুষ এবং পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে সরকার ফুজি দর্শনের স্থানটিকে দেওয়াল তুলে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। পরিবেশ রক্ষা, মানুষের অধিকার, শব্দ-বায়ু-জল দূষণের থেকে রক্ষা পেতে সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানা গেছে।
ঠিক যখন পৃথিবী পরিবেশ দূষণ, বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রভৃতি সমস্যায় জর্জরিত; ঠিক তখনই ভারতে দীর্ঘ দুই মাস ধরে পরিবেশ ও অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে অনশনে লাদাখের মানুষ, গাছ কেটে ফেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ছত্তিশগড়ের মানুষ, পাহাড় কেটে সুরঙ্গ তৈরির প্রতিবাদে যোশীমঠের মানুষ, অরণ্যের অধিকারের দাবি নিয়ে আদিবাসিরা দিনের পর দিন লড়ে যাচ্ছেন। অথচ সরকারের মদতে বাইরের কর্পোরেট কোম্পানি এসে ধ্বংস করছে ক্ষয়ে যেতে বসা প্রাকৃতিক সম্পদ। আর একই সময়ে এই এশিয়া মহাদেশের অন্য এক দেশেই উলটো ছবি। যে ছবি ক্ষমতাকে সন্দেহ করতে বাধ্য করছে, প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে মানুষের অস্তিত্ব নিয়েই।
Discussion about this post