ধবধবে সাদা, তুলতুলে নরম, গরম গরম; মুখে তুললেই রসে টইটম্বুর। হ্যাঁ, রসগোল্লার কথাই হচ্ছে। বাঙালি বা কোলকাতার নাম শুনলেই গোটা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের মানুষ বলে ওঠেন যে ‘রসগুল্লা’ বা ‘রোসোগোল্লা’র নাম। রসোগোল্লার আবিষ্কার বাঙালির নাকি বাঙালির আদৌ নয়, সে নিয়েও বিতর্ক হয়েছে বিস্তর। কিন্তু পাতে দুটো গরম গরম রসগোল্লা পড়লে কে আর মনে রাখে সেসব বিতর্ক! ওপার বাংলার শরীয়তপুরের হারু ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডার সেই কাজই করে চলেছে ৭০ বছর ধরে। বানিয়ে চলেছেন স্বাদে-মানে-গন্ধে অতুলনীয় রসগোল্লা।
শরীয়তপুরের পালং উত্তর বাজারে ১৯৫৩ সালে দোকান তৈরি করেছিলেন হারু ঘোষের বাবা শচীনাথ ঘোষ। মিষ্টান্ন ভান্ডারের নামকরণটি হয়েছিল প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পরে। মাত্র তিনজন মিষ্টি তৈরির কারিগর নিয়ে তৈরি হয়েছিল দোকান। দোকান বলতে ছিল ছোট্ট একটি টিনের একচালা ঘর। বানানো হত রসগোল্লা। রসগোল্লার পাশাপাশি এই দোকানে তৈরি হত আমিত্তি, জিলিপি, খেজুর, লালমোহন আর সন্দেশ। শচীনাথের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শচীনাথের ছেলে হারু ঘোষ দায়িত্ব নেন প্রতিষ্ঠানের। বাবার স্থির করা মিষ্টির লিস্টে তিনি যোগ করেন ছানার সন্দেশ, রসমালাই আর দই।
অল্প সময়ের মধ্যে হারু ঘোষের মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে জেলাজুড়ে। এরপর থেকেই দোকানের নাম হয়ে যায় হারু ঘোষ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। মিষ্টির গুণগত মান ঠিক রেখে ৭০ বছর ধরে এই হারু ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডার তার সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছে। সকলেই এক কথায় চেনে এই দোকান ও দোকানের মিষ্টি। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার বিক্রি হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ছয়জন কারিগর মিষ্টি তৈরির কাজ করেন। প্রতিদিন গড়ে ২৫০-৩০০ কেজি দুধের বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি তৈরি হয় এবং এর মধ্যে শুধু রসগোল্লাই তৈরি হয় ৭০-৮০ কেজি ছানার। বর্তমানে হারু ঘোষের ছেলে সুমন ঘোষ দোকানের দায়িত্ব নিয়েছেন।
Discussion about this post