দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নিমপীঠে একটি নতুন শিল্পের জন্ম হয়েছে, যা স্থানীয় জনজীবনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই শিল্পটি হল ব্যাম্বু সল্ট বা বাঁশের লবণ উৎপাদন। যার বিদেশী নাম জাইকম সল্ট। এই অঞ্চলে বাঁশ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন ধরে বাঁশকে ব্যবহার করা হয়ে আসছে বাড়ি তৈরি, জিনিসপত্র তৈরি এবং অন্যান্য কাজে। কিন্তু নিমপীঠের উদ্যোক্তারা বাঁশকে একটি নতুন রূপ দিয়েছেন।
বাঁশের লবণ! শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর একটি পণ্য। এটি তৈরির জন্য মূল উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় সামুদ্রিক লবণ ও বাঁশ। প্রথমে নির্দিষ্ট মাপে বাঁশ কেটে নেওয়া হয়। তারপর ওই ফাঁপা বাঁশের ভিতর লবণ ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে উচ্চ তাপমাত্রায় আগুনে পোড়ানো হয়। এর ফলে বাঁশের সমস্ত উপাদান লবণের সাথে মিশে যায়। তিনবার এই প্রক্রিয়া করার পর তৈরি হয় ব্যাম্বু সল্ট।
মূলত ১০০০ বছর আগে কোরিয়ান সন্ন্যাসী ও ডাক্তাররা তৈরি করতেন জাকুয়াম নামে পরিচিত বাঁশের লবণ। এই লবণটি খুবই স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয় কারণ এতে বাঁশের সমস্ত পুষ্টিগুণ থাকে। এই লবণ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম রয়েছে। যা আমাদের হার্ট ভালো রাখে এবং চর্মরোগ দূর করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় এই সল্টে রয়েছে অ্যালকালাইন প্রপাটিস, যা দেহে পিএইচ মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এমনকি নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
নিমপীঠের ব্যাম্বু সল্ট প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক প্রভাত কুমার নাটুয়া জানায়, “এই লবণ বহু মূল্যবান। মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমি বর্তমানে লাভের মুখ দেখেছি এই লবণ বানিয়ে। আমি চাই, এই কাজের সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যুক্ত হোক। এর ফলে কর্মসংস্থানও বাড়বে এবং মানুষের শারীরিক রোগব্যাধি কমানোর এক নতুন দিশা খুলে যাবে।” তিনি আরও বলেন যে, এখনও অনেকেই এই সল্টের ব্যাপারে জানেন না। তাই এই ব্যাম্বু সল্টের প্রচার বাড়লেই মানুষ এটি তৈরি করতে এবং কিনতে এগিয়ে আসবেন।
Discussion about this post