পৃথিবীর ইতিহাসে ‘প্যানডেমিক’ শব্দটি নতুন কিছু না। প্লেগ, কলেরা, ম্যালেরিয়া, স্প্যানিশ ফ্লুয়ের মতো এখন বিশ্বজুড়ে ত্রাস করোনা। প্রতিকারের নিশ্চিত কোন উপায় মানব সভ্যতার হাতে নেই। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ পৃথিবীর সকল বিশেষজ্ঞের একটাই মত। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ। পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই তাই কার্যত চলছে লকডাউন। অত্যন্ত প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা ছাড়া কেউই বাড়ির বাইরে পা রাখছেন না। ঘরবন্দী থাকার দরুণ নিজেদের মানসিক চাপ কাটাতে ও সময়কে উপযুক্তভাবে ব্যবহার করার জন্যই গোটা পৃথিবী জুড়েই মানুষ নিজেদের প্রাত্যহিক অভ্যাসের বাইরে গিয়ে নানান অবসর যাপনের মাধ্যমকেই হাতিয়ার করে নিতে চাইছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে এর প্রতিফলন। কেউ নাচ, কেউ গান, কেউ লেখা, কখনো সিনেমা চ্যালেঞ্জ বা সিনেমা কেন্দ্রিক আলোচনা, ছবি ইত্যাদি বিভিন্ন সুপ্ত প্রতিভার প্রকাশ দেখা মিলছে এই সময়।
এমনই এক অভিনব কাজ করলেন ইউরোপের ছোট্ট দেশ লিথুয়ানিয়ার আলোকচিত্রী অ্যাডাস ভ্যাসিলিয়াসকাস। আলোকচিত্র অবশ্য শুধু তার শখ না, পেশাও বটে। বিজ্ঞাপন জগত ও ওয়েডিং ফটোগ্রাফিই তার উপার্জনের মাধ্যম। কিন্তু এই মুহূর্তে সবকিছুই বন্ধ, বাতিল হয়েছে তার সমস্ত কাজ। তাই খানিক সময় কাটানোর তাগিদেই নিজের ড্রোনটিকে অস্ত্র বানিয়ে নিলেন অ্যাডাস। ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সম্পূর্ণ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কোন রকম শারীরিক স্পর্শ ছাড়াই প্রতিবেশীদের কোয়ারেন্টাইন যাপনের মুহূর্ত লেন্স বন্দী করেছেন তিনি।
করোনা আতঙ্ক না, বরং তা থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ কীভাবে নিজের বাড়িতেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে? ঘর’ এই শব্দটি মানুষের জীবনে কতটা আবেগময় সেটা দেখানোর জন্যই তার এই প্রচেষ্টা। ব্যালকনি, জানালার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি পোট্রেট আসলেই শুধু নিছক অবসর যাপন কিংবা আইসোলেশন যাপনের গল্প নয়। সেই সঙ্গে এই কঠিন মুহূর্তের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কাহিনীও বটে। আমরা যারা এই ১৭ দিনের লকডাউনে বিব্রত ও বিরক্ত, তারাও হয়তো পারি নিজেদের জীবনে অ্যাডাসের মতোই কোন অভিনব পন্থা অবলম্বন করতে। খানিক নিজেদের মতো করেই।
বি: দ্র: প্রতিটি ছবি শিল্পী অনুমতি নিয়েই তুলেছেন এবং তা প্রকাশ করার জন্য অনুমতি নিয়েছেন। ‘ডেইলি নিউজ রিল’কেও শিল্পী ছবিগুলি প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন শিল্পী।
প্রতিটি ছবির স্বত্ত্বাধিকারী © অ্যাডাস ভ্যাসিলিয়াসকাস
Discussion about this post