বৃষ্টির ছিটেফোঁটা ধরা দিলেই চলে আসে নতুন উৎসবের কথা। আর বর্ষার উৎসব শুনলেই প্রথমে যা মনে আসে, তা হলো রথ। ইতিমধ্যেই রথ যাত্রা কড়া নাড়ছে দরজায়। রথে চড়ার জন্য জগন্নাথ দেবও প্রস্তুত।
রানাঘাটের খুব কাছের একটি গ্রাম আনুলিয়া। এ গ্রামে রয়েছে এক ছোট্ট কিন্তু অন্যরকম রথযাত্রার গল্প। বেশ কিছু বছর ধরে চলে আসছে আনুলিয়ার এই রথ যাত্রা। যা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ভোলানাথ চক্রবর্তীর বাড়িতে। ছোটবেলায় রথ টানার বায়না কম বেশি সব বাচ্চারই থাকে। তেমনই বায়না রথ বানিয়ে দেবার বায়না ছিল ভোলানাথ চক্রবর্তীর ছেলের। বড় ছেলের সেই বায়না মেটাতেই তিনি বানিয়ে দেন রথ। যার উপকরণ বলতে ছিল ভেটুল গাছের ফল আর ঝাঁটার কাঠি। পরে তা ধীরে ধীরে কাঠের হয়ে ওঠে। তবে হাল আমলে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে লোহার পাইপ এবং টিনের সিট দিয়ে তৈরি একটি রথে।
ভোলানাথবাবু পেশায় একজন মিস্ত্রি হওয়ার দরুন এ কাজ সহজ হয়েছে। বিগত ২২ বছর ধরে এ রথের রশিতে টান পড়ছে। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো ঠাকুরের মূর্তি। জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি তিনি তৈরি করেছেন নিজের হাতে। বাড়িতে থাকা নিমের গুঁড়ি থেকে কেটে এ মূর্তি তিনি গড়েছেন। মনে নিষ্ঠা না থাকলে যা এককথায় অসম্ভব। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের চেয়ে এখানকার চাকচিক্য খুব একটা যে কম এমনটা মনে করার কোন কারণ নেই। স্থানীয় লোকেরা প্রাণ ভরে নেন উৎসবের গন্ধ। তবে এ উৎসবের জন্য ভোলানাথবাবু কারোর থেকে কোনো অনুদান নেন না। প্রায় লাখ খানেক টাকা খরচ হয় এই রথযাত্রার উৎসবে। আনুলিয়া থেকে শুরু করে জগপুরের রাস্তা জুড়ে চলে পরিক্রমা। এরপর নির্ধারিত মাসির বাড়ি হয় ওএনজিসি’র মাঠে। সেখানেই সাত দিনের জন্য থাকেন জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রা।
Discussion about this post