বর্ষার মরসুম মানেই ইলিশ। আর ইলিশ শুনলেই প্রথমেই মনে হয় সর্ষে বাটা ইলিশ কিংবা ভাপা ইলিশের কথা। সে সব তো আছেই। তবে ইলিশের ঝোলও কিন্তু কম সুস্বাদু নয়। বাংলাদেশের নানা জেলায় ইলিশের নানা রকম পদের চল রয়েছে উনিশ শতকের আগে থেকে। রাজশাহীর একটা অংশে ইলিশ মাছের ঝোল রান্না করা হত বেগুন দিয়ে। এখন প্রতিটি বাঙালি ঘরে অনেকেই এই পদ বানাতে জানেন। কিন্তু এই তথাকথিত পদগুলি ছাড়াও এমন কিছু বাঙালীর ঘরোয়া ইলিশের পদ রয়েছে যেগুলি স্বাদে অনবদ্য। আসুন জেনে নিই সেই সমস্ত হারিয়ে যাওয়া ইলিশের পদগুলি।
কথায় আছে “শাপলা শালুকে সাজাইয়া সাজি”- শাপলা শুধু সাজি সাজাতেই লাগে না তার স্বাদও যে চমৎকার ক’জন শহরবাসী সে খবর জানেন! জানেন কি শাপলা দিয়ে ইলিশ ঘন্ট ও সম্ভব। গ্রাম বাংলায় সহজলভ্য বাঙালির একেবারে ঘরের জিনিস শাপলার সঙ্গে ইলিশের মাথা- তা সে ইলিশ গঙ্গারই হোক আর পদ্মার যখন মিলেমিশে যায় তখন যে কী অপূর্ব এক স্বাদের জন্ম হয়, তা জানতে হলে এইবার করে দেখতেই হবে এই রেসিপি।
শাপলা ভালো করে ধুয়ে টুকরো টুকরো করে কাটতে হবে। ইলিশের মাথা ভাল করে ধুয়ে অর্ধেক করে কেটে আবার লম্বালম্বিভাবে কাটতে হবে। কাটা টুকরোগুলোয় নুন হলুদ মাখাতে হবে। কড়াইতে সরষের তেল ভালো করে গরম করে টুকরোগুলো ভালো করে ভেজে রাখতে হবে। শাপলা জলে সিদ্ধ করে জল ঝরিয়ে রাখতে হবে। জল ঝরে গেলে শাপলার সিদ্ধ টুকরোগুলো হাত দিয়ে ভালোভাবে চটকে নিতে হবে। কড়াইতে তেল কমে এলে আরও একটু তেল দিয়ে শুকনো লঙ্কা, কালো জিরে ফোড়ন দিয়ে, শাপলা দিতে হবে। একটু নাড়াচাড়া করে হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, নুন আর সামান্য চিনি দিয়ে বেশ করে নেড়ে ইলিশের মাথার ভাজা টুকরোগুলো আর কাঁচা লঙ্কা দিয়ে খুব ভালোভাবে মেশাতে হবে। বেশ আঁট হয়ে এলে একটু আটা ছড়িয়ে ভালো করে মিশিয়ে নামাতে হবে।
তাহলে আর অপেক্ষা কীসের? বর্ষণমুখর সময়ে ইলিশের এই নতুনত্বের স্বাদ নিতে ঘরে সহজ উপায়ে বানিয়ে ফেলুন শাপলা দিয়ে ইলিশ ঘন্ট।
চিত্র ঋণ – জিও বাংলা
Discussion about this post