করোনা আতঙ্কে জেরবার গোটা বিশ্ব। প্রায় প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে এই আতঙ্কের মাঝেই বেশ কয়েকটি নতুন শব্দ আমাদের কানে আসছে রোজই। রোজকার জীবনে সেগুলির সঙ্গে আমাদের তেমন পরিচিতি হয়ত আগে ছিল না। কিন্তু ইদানীং যেকোনও সোশ্যল মিডিয়া হোক বা টেলিভিশনের পর্দা, শব্দগুলির দেখা মিলছে প্রায় রোজই। সেই শব্দগুলির সম্পর্কেই একটু জেনে নেওয়া যাক।
‘করোনা’- করোনা নামটির উৎপত্তি একটি ল্যাটিন শব্দ থেকে যার অর্থ ‘মুকুট’। খানিক মুকুটের মত দেখতে বলেই তার এই নামকরণ। ইদানীং আট থেকে আশি সবার মুখে মুখে ঘুরছে এই শব্দটি। ফেসবুক বা টুইটারের মত সোশ্যাল মিডিয়াতেও এখন করোনা নিয়ে প্রচুর তথ্য বা খবর সবার চোখে পড়ে। এমনকি হাসি-ঠাট্টা করার মত বিষয়েও আজকাল করোনার নাম শোনা যাচ্ছে। রাস্তা ঘাটে ঘুরে ফিরে বারবার এই নামটাই কানে আসছে আমাদের।
‘কোয়ারেন্টাইন’- এই শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ‘বন্দী বা বন্দী করে রাখা’। করোনা আতঙ্কে মানুষজনকে হোম কোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ ঘরবন্দী থাকার নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই ইদানীং বেশি মাত্রায় শোনা যাচ্ছে এই শব্দটি। তবে এর আগেও বিভিন্ন বইতে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। হার্জের লেখা টিনটিন কমিক্সে ‘সূর্যদেবের বন্দী’ নামক গল্পে এই শব্দটির দেখা মিলবে। এছাড়া কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসেও আমরা দেখতে পাই মহামারী প্লেগের সময় কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলা হয়েছে। যারা কম্পিউটার নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন তারাও বেশ পরিচিত এই শব্দটির সঙ্গে। কম্পিউটারে অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহারকারীরা তাঁরা জানেন, কোনও ভাইরাস সনাক্ত করার পর যেখানে তাদের রাখা হয় সেটিকেই বলা হয় ‘কোয়ারেন্টাইন’।
‘লক ডাউন’- করোনার রকেট গতির সংক্রমণে বিশ্ব জুড়ে ‘লক-ডাউন’ ঘোষিত হয়েছে। গোটা ভারতের মতোই পশ্চিমবঙ্গবাসীও পাচ্ছেন লক ডাউনের তেতো স্বাদ। ‘লক ডাউন’ কথাটির অর্থ জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত কিছু বন্ধ রাখা। সম্ভবতঃ এই প্রথম কোনও ‘লক ডাউন’ এর দেখা পেলাম আমরা। কাজেই দেখা যাচ্ছে, করোনার জেরে বেশ কিছু নিত্য নতুন শব্দ আমাদের জ্ঞানভাণ্ডারে আমদানি হয়েছে। অল্প পরিচিত সেই শব্দগুলিই আজকাল আমাদের রোজকার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে।
Discussion about this post