দেখতে দেখতে পৌঁছে যাওয়া চলতি বছরের শেষ লগ্নে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ তাই ক্রিসমাস ও নববর্ষের উদযাপন ঘিরে সেজে উঠেছে খুশির রোশনাইয়ে। সংস্কৃতির ইতিহাস বলে পুজো পার্বণ যেমন উপাসনাকে ঘিরে গড়ে ওঠে, ঠিক তেমনই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নানা খাবার দাবারের বহর। বছরান্তে ক্রিসমাস ও নববর্ষ ঘিরে একদা ব্রিটিশদের দ্বিতীয় রাজধানী কলকাতাও বাঙালিয়ানার সঙ্গে সাহেবিয়ানাকে বহন করে চলেছে আজও সমান ভাবে। কেক-পেস্ট্রি-কুকিজ-ক্যান্ডিজের সঙ্গে বাঙালি নানা রকম তন্দুর, কাবাব ও রোস্টের খোঁজ করতে থাকে এই সময়ে বিশেষ করে। ক্রিসমাসের মনোরম শীতে তাই ল্যাম্ব-পর্ক-চিকেনের পাশাপাশি যে বিশেষ পাখির মাংসের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে সেটা হলো টার্কি।
রূপে যতই টার্কি তার গড়নের জন্য বিতৃষ্ণা সঞ্চার করুক, মাংসের জন্য ভোজন রসিক এই দ্বিপদ প্রাণীকে সেরার সেরা মেনে নিতে এক পায়ে রাজি। শীতের কলকাতায় অভিজাত রেঁস্তোরায় টার্কির দাবি থাকে দেখার মতো। ‘টার্কির রোস্ট’ ভোজন তালিকার প্রথম পছন্দ আগাগোড়াই বলে কলকাতার নামি রেঁস্তোরার মালিকদের বক্তব্য। মানুষের ঢল ক্রিসমাস ও বর্ষবরণের রাতে তাই আছড়ে পড়ে রেঁস্তোরায় টার্কির সুস্বাদু মাংস চেখে দেখতে। রোস্ট ছাড়াও টার্কির বিভিন্ন পদ যেমন স্টাফড, গ্লেজ্ড, ড্রাই ব্রাইন্ড, স্মোকড ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয় রসিক মহলে।
টার্কির বিপুল চাহিদার যোগান দিতে হিমশিম খান ব্যবসায়ীরা। এই প্রসঙ্গে নিউ মার্কেটের প্রবীণ টার্কি বিক্রেতা আফজল আলী জানান যে ক্রিসমাসের সময়ে সত্যিই তাদের টার্কির যোগান দিতে নাভিশ্বাস ওঠে। দৈনন্দিন চাহিদার তিনগুণ দাবি বেড়ে যায় টার্কির। সুস্বাদু পাখির মাংস বর্তমানে পাওয়া যায় ৪৫০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। যদিও আফজল জানান উৎসবের মরসুমে দাম একটু হলেও বাড়বে। টার্কি মুরগির চেয়ে আকারে বড় হলেও অবিশ্বাস্যভাবে ক্যালোরি মিটারে মুরগির অর্ধেক। স্বাস্থ্যকর এই পাখির মাংস ভোজন রসিকদের একটা বড় অংশের মত অনুযায়ী স্বাদে মুরগির চেয়ে অনেক এগিয়ে। পারদ নামার সঙ্গে টার্কির চাহিদা যে বাড়ছে শহরে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Discussion about this post