বাঙালি আর মিষ্টি এই অসাধারণ যুগলবন্দি সেই মান্ধাতার আমল থেকেই সুপারহিট। মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়াই বড্ড মুশকিল। তবু হাল আমলে শরীর-সচেতন লোকজনের দয়ায় মিষ্টিপ্রেমীদের তালিকায় একটু ভাটা পড়েছে বলা যায়। কিন্তু মিষ্টির জগতে এখনও নট আউট কম বেশি সকলের প্রিয় রাবড়ি। মুখে দিলে একটাই আওয়াজ আহা! হুগলীর আইয়া গ্রামটি অনেকের কাছেই পরিচিত রাবড়ি গ্রাম নামে, তবে এ আরেকটা রাবড়ি গ্রাম। হাওড়ার বড়গাছিয়া থেকে মিনিট খানেকের দূরত্বে অবস্থিত গাংপুর গ্রাম। গ্রামটি এখন বহুল পরিচিত রাবড়ি গ্রাম নামেই। গোটা একটা গ্রামের নাম বদলালেও তাতেই গর্বিত গ্রামবাসী।
এখানকার মানুষদের আসল পেশাই হল রাবড়ি তৈরি। পুরুষ, মহিলা সকলেই ব্যস্ত রাবড়ি তৈরি করতে। গ্রামের কতগুলো পরিবার যে একাজের সঙ্গে যুক্ত তার ইয়ত্তা নেই। আর সেই মিষ্টি পৌঁছে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেমন বড়গাছিয়া, রামরাজাতলা, সলপে। সেই মিষ্টির স্বাদে ও গন্ধে কাবু সব মিষ্টিপ্রেমী মানে রাবড়িপ্রেমীরা। আর শুধু কি তাই! কলকাতার নামীদামী মিষ্টির দোকানগুলোও বাদ যায় না। প্রতিদিন কিলো কিলো রাবড়ি পাড়ি দেয় গাংপুর থুড়ি রাবড়ি গ্রাম থেকে। আর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে তুঙ্গে।
উপকরণ বা পদ্ধতি কোনোটা তেমন আহামরি কিছুই না। প্রথমে চিটকে কড়াইতে দুধ ফুটিয়ে নেন তারা। তারপর অল্প আঁচে তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া দেন দুধের ওপরে পড়া সরের জন্য। এবার পাতলা সরু সরু কাঠির সাহায্যে তুলে কড়াইয়ের গায়ে লেপে দেওয়ার পালা। এভাবে প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে সর তুলতে। শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণ দুধ রেখে চিনি মিশিয়ে দেওয়া হয়। তারপর প্রায় দেড় দুঘণ্টা কড়াইতে রেখে ছুরি দিয়ে কেটে সর বাকি দুধে মিশিয়ে নিলেই তৈরি রাবড়ি। ৬-৭ কেজি দুধ থেকে ২ কেজি রাবড়ি তৈরি হয়। এভাবেই তৈরি হয় জনপ্রিয় মিষ্টি রাবড়ি। আর এই রাবড়ির টানেই মিষ্টিপ্রেমীরা গিয়ে ভিড় জমান রাবড়ি গ্রামে।
Discussion about this post