প্যাটিস পেস্ট্রির যুগে বেকারি কেকের চাহিদা বেশ কমেছে। কিন্তু তার অস্তিত্ব হারায়নি আজও। তারউপর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের টিফিন বলতে বেকারি কেকের জুড়ি নেই। তার মিষ্টি স্বাদে বাঙালির হৃদয় সর্বদাই দুর্বল হয়ে থাকে। কলকাতার অলিতে গলিতে কেকের দোকান তো অসংখ্য। কিন্তু কেক তৈরীর কারখানাগুলোর খোঁজ কতটাই বা রাখেন? বড়ুয়া বেকারি বাংলার প্রথম কেক বেকারি হলেও, পুরোনো দিনের এমন অনেক বেকারি আজও নির্দ্বিধায় দাঁড়িয়ে। মধ্য কলকাতায় রয়েছে এমনই এক বেকারি, যার পরতে পরতে রয়েছে ঐতিহ্য। রয়েছে মন ভালো করা এক পুরোনো গন্ধ। এখনো কাঠকয়লার উনুনে এখানে তৈরী হয় কেক।
সালডিনহা বেকারির বর্তমান মালিক হলেন ডেঞ্জেল সালডানহা। ইনি এই পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্ম। তবে তৃতীয় চতুর্থ প্রজন্মই এখন বেকারির দায়িত্বে রয়েছেন। পরিবারটি গোয়া থেকেই আগত। ডেঞ্জেলের মা-বাবা উবেলিনী এবং ইগনেসিয়াস সালডানহাই এই বেকারিটির পত্তন ঘটান কলকাতাতে। আগে ২০-৩০ জন মাথায় ঝুড়ি নিয়ে বের হতো বেকারি কেক বিক্রি করতে। কিন্তু এখন তা আর নেই। আজ এখান থেকে কেক কিনতে আগে থেকে অর্ডার করতে হয়। অর্ডার ছাড়া তাঁরা বানান না। তাই জিনিস হয় টাটকা। চিকেন প্যাটিস, চকোলেট পেস্ট্রি, কোকোনাট মাকারুন, ফ্রুট কেক, স্যান্ডউইচ, মাফিন এসব পদের সম্ভারও রয়েছে। ২৫-৩১শে ডিসেম্বর এখানের ভিড় চোখে পড়ার মতোই। তখন অর্ডার ছাড়াই কেক মেলে।
সালডানহা বেকারির চাহিদা আজও অন্যমাত্রায়। তার স্বাদ আজও রয়েছে আগের মতোই। আজও ভরপুর বিশ্বাস রয়েছে কলকাতাবাসীর এই বেকারির ওপর। যদি কেউ যেতে চান, সবচেয়ে সোজা উপায় রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের বিসি সেন জুয়েলার্সের গা দিয়ে একটি রাস্তা চলে গিয়েছে নবাব আব্দুর রহমান রোড। সেই রাস্তায় একটু এগোলেই ঠিক বাঁ দিকে পড়বেএই বেকারি। নিজেরই চেখে দেখে নিন এই বড়োদিনে সালডানহার কেক পেস্ট্রি। সে আপনার সুগার থাকুক আর নাইবা থাকুক। সময় হলে একবার ঢুঁ মেরেই দেখতে পারেন ঐতিহ্যের আখড়া এই বেকারিটিতে।
Discussion about this post