অনেকেই জানেন, যে কোনও খাবারে তার স্বাদ ও গুণগত মান বাড়িয়ে তুলতে জাফরানের জুড়ি মেলা ভার। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি মশলা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটিও বটে। দুর্মূল্য হওয়ার কারণে অনেকে জাফরানকে ‘লাল স্বর্ণ’ ও বলে থাকেন। তাই এই দুর্মূল্য ফসলের চাষ করাও কি চারটি খানি কথা? একেবারেই নয়। আবহাওয়াগত বৈচিত্র্য, উর্বর মাটি এবং কষ্টসহিষ্ণু পরিশ্রমী মানুষের কাজ হল জাফরান চাষ। আমাদের দেশে জাফরান চাষ হয় ভূস্বর্গে অর্থাৎ কাশ্মীরে। শুধু চাষই নয়, পাশাপাশি প্রতিবছর বেশ সাড়ম্বরের সাথে জাফরান উৎসবও পালিত হয় এখানে। চলুন জেনে নিই এ সম্পর্কে দু-এক কথা।
প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কাশ্মীরে জাফরান উৎসব পালিত হয়। এবছরেও যেমন কাশ্মীরের পামপোর নামক একটি গ্রামে ২৩ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পালিত হয়েছে এই উৎসব। পুলওয়ামা জেলায় অবস্থিত এই গ্রাম শ্রীনগর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পামপোরের আরেকটি পরিচিতি হল এটি ভারতের ‘জাফরান রাজধানী’ নামেও পরিচিত। এই সময় জাফরানের বেগুনি আভায় ঢেকে যায় ভূস্বর্গ। মাঠ জুড়ে যেন জাফরানের মেলা!
জাফরান উৎসব পালনের পিছনে কয়েকটা কারণকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত ভূস্বর্গের জাফরানকে বাজারজাত করাই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও ভূস্বর্গের জাফরান উৎসব জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর পর্যটকেরা ভিড় করেন জাফরান চাষ দেখার জন্য। জাফরানের বীজ রোপণ, ফসল কাটা, এর থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য এবং জাফরান ফুল তোলা সবই ক্যামেরা বন্দী করে নিয়ে যান পর্যটকরা। উৎসবে এসবের পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে থাকে এলাহি আয়োজন। যেমন -কাশ্মীরি নাচ-গান, বিশ্ব বিখ্যাত শাল, কাঠের কাজ, কার্পেট, খাদ্য সামগ্রী ও আরও কত কি!
Discussion about this post