“স্নেহ অতি বিষম বস্তু”, বহুকাল আগেই বিদ্যাসাগরমশাই তা জানিয়েছিলেন। স্নেহের বাঁধনে চিরকাল আটকা পড়ে মানুষের আবেগী মন। ভিন্ন মানুষের ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল যদিও পৃথক কিন্তু বহিঃপ্রকাশটা একদম এক। উদ্ভিদপ্রেমী মানুষ প্রতিদিন সকালে বের হন জল ভর্তি ঝারি হাতে নিয়ে। আবার ঘরের পোষ্যদের নিজে হাতে খাওয়ান তার পালনকারী। সত্যি বলতে ভালোবাসার মধ্যেই যেন লুকিয়ে থাকে এক দায়িত্ববোধ। সন্তানের জন্য মা-বাবা ঠিক যেমনটা অনুভব করেন তেমন আদর যত্নেই লালন হয় এরাও। তবে চলুন আজ সেই স্নেহ ও ভালোবাসার রেশ অন্য ধাঁচের প্রমাণ দেয়।
বাড়ির মেয়ের সাধভক্ষণ। থালায় তার প্রিয় রকমারি খাবার সাজিয়ে প্রদীপ জ্বেলে চলল শুভকামনার অনুষ্ঠান। ভাবছেন এ আবার নতুন কি! সব মেয়ে কিংবা বৌদেরই তো এমন ঘরোয়া অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। না, এখানের ছবি ছিল কিছুটা আলাদাই। ফিল্ম প্রযোজক শুভঙ্কর হালদার এবং শতরূপা মন্ডলের এই মেয়ে আসলে তাঁর পোষ্য সারমেয়। এমনই দুটি পোষ্যকে তাঁরা অনেকদিন ধরে নিজের মেয়ের আদরে বড় করেছেন। আজ তাদেরই একটি কুকী গর্ভবতী। তাই কুকীর মা অর্থাৎ শতরূপা দেবী নিজে হাতে সাজিয়েছেন খাওয়ারের থালাটি। লাল শাড়ী পরে সেজেছে কুকীও। ১২ কি ১৩ তারিখের দিকেই কুকীর কোলে আসবে ছোট্ট ছানা। তাই তার আগেই অভিভাবকের দায়িত্বটা পালন করলেন তার বাবা-মা শুভঙ্করবাবু ও শতরূপা দেবী।
এই গ্রহে শ্রেষ্ঠত্বের আসন পেয়েছে এই মানব জাতি। তার আবেগ অনুভূতি বিচক্ষণতা সবটাই অন্য প্রাণীদের থেকে এগিয়ে। তাই মানুষেরও কর্তব্য সব জাতি প্রজাতি যাতে নির্বিঘ্নে বিচরণ করে। এই চিন্তাভাবনাতেই আজ বহু পশুপ্রেমী প্রকৃতিপ্রেমীরা হয়েছেন সচেতন। কিন্তু এইভাবে বাড়ির প্রিয় পোষ্যটির যে সাধ দেওয়াও সম্ভব এ এক অনন্য দৃষ্টিভঙ্গী। এমন নজির সত্যিই সাধুবাদের যোগ্য। কুকী তার ছানাদের নিয়ে সুস্থ থাকুক। আদর ভালোবাসায় ভরে উঠুক শুভঙ্করবাবুর এই মিষ্টি পরিবারটি। শুভঙ্কর বাবু এবং শতরূপা দেবীর এই পদক্ষেপের সমালোচনাও হয়তো কেউ কেউ করবেন। যদিও পরিবারের একজন মানুষ সদস্যের সম্মানের চোখে পোষ্যকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গীও প্রশংসার দাবী রাখে।
Discussion about this post