গত দু’মাস ধরে চলতে থাকা লকডাউন সমাজের মধ্যে ‘প্রান্তিক’ করে রাখা মানুষদের আরো ‘প্রান্তিক’ করে দিয়েছে। লিঙ্গ যৌনতার প্রান্তিক মানুষরা, যৌন কর্মীরাও তাদের নিয়মিত আয়ের জায়গা হারিয়েছেন। ‘আমফান’ ঝড়ে অনেকের বাড়ির টালি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নিয়মিত তাঁরা যেসব ওষুধ খান সেগুলি পাচ্ছেন না। গর্ভবতী মহিলারাও নিয়মিত পাচ্ছেন না পুষ্টিকর খাবার। তাদের পরিবার (মা-বাবা,সন্তান)-এর অসুস্থ সদস্যদেরও অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। যেহেতু এই মানুষদের প্রতি তথাকথিত ‘ভদ্র’, ‘শিক্ষিত’ সমাজের একটা নাক সিঁটকানো ভাব রয়েছে, তাই তারা আবারও ব্রাত্যই থেকে যাচ্ছেন।
ঠিক এই পরিস্থিতিতে ‘কোয়ারেন্টাইনড স্টুডেন্টস ইয়ুথ নেটওয়ার্ক’এর তরফে শেওড়াফুলির গড়বাগান অঞ্চলে থাকা কিছু যৌনকর্মী, গর্ভবতী মহিলা ও লিঙ্গ যৌনতায় প্রান্তিক করে রাখা মানুষদের হাতে সামান্য কিছু সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হল। পার্থ, কৃষ্ণ, স্নেহা, শুভঙ্কর যদিও এটিকে সাহায্য বলতে নারাজ। তাদের মতে, জীবনযুদ্ধে আরো কিছুদুর এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটিকে বরং ‘সংহতি’ই বলা যায়। তাঁরা মনে করছেন, শারীরিক দূরত্বের সাথে সাথে সামাজিক দূরত্ব বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে যে বিভেদের বীজ উটপাটন করার স্বপ্ন আমরা দেখি, তা সমাজের বুকে আরও গেঁথে বসছে। লড়াইয়ের জীবনে ‘করোনা’র লকডাউন আর ‘আমফান’ নতুন করে আরো বড়ো জীবনযুদ্ধের সামনে দাঁড় করিয়েছে। আর তাই স্নেহা-শুভঙ্করদের ভাষায়, যা দিতে পেরেছি তা খুবই কম। মহাসমুদ্রের এক কণা জল মাত্র। তবে ভরসা রয়েছে, এই এক বিন্দু বিন্দু জলই একদিন মহাসাগর বানাবে।
Discussion about this post