পুরান ঢাকার অন্যতম আকর্ষণ হলো, মরণচাঁদ এন্ড সন্স। শুধু পুরান ঢাকা বলা ভুল হবে, বর্তমানে পুরো বাংলাদেশের অন্যতম ব্র্যান্ড এই প্রতিষ্ঠান। দেশ বিদেশ মিলিয়ে তাদের শাখার সংখ্যা অনেক। পুরনো দিনের প্রায় হারিয়ে যাওয়া অনেক মিষ্টিই এই দোকানে মিলবে। স্বাদের বিশেষত্ব এখনও আগের মতোই খাঁটি।
মিষ্টির পাশাপাশি এই দোকানের অপর আকর্ষণ এখানকার পরোটা। জলখাবারের এই পরোটা আর নিরামিষ ডাল সবজির স্বাদ নিতে ছুটে আসে হাজার মানুষ। একসময় শুধু সকালে এই আইটেম বানানো হলেও এখন তা সকাল-রাত সবসময়ই পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বেশির ভাগ অঞ্চলেই তরকারিতে পেঁয়াজ খাবার প্রচলন বেশি। তাই বিনা পেঁয়াজের এমন সুস্বাদু নিরামিষের চাহিদা এখানে প্রবল। নিরামিষ পাঁচ তরকারি আর ছোলার ডালের সাথে পরোটা। স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য থাকছে তেল ছাড়া পরোটা। নরম মুচমুচে আবার পাতলা এই পরোটার বিশেষত্ব এখনো অজানা। তবে অন্য জায়গার থেকে পরোটার স্বাদ আলাদা এবং বেশি।
প্রায় দুশ বছরের বেশি সময় ধরে নিজেদের খাবারের মান ধরে রেখেছেন। প্রতিষ্ঠাতা মরণচাঁদ স্বয়ং, বর্তমানে তার বংশধররা ব্যবসা সামলাচ্ছেন। সেই সময় থেকেই খাবারের দাম এবং মানের জন্য জনপ্রিয় এই প্রতিষ্ঠান। ভেজালের যুগে এখনো তারা খাঁটি জিনিসটাই বানান সেটা তাদের খাবারের স্বাদই বলে দেয়। আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই দুর্মূল্যের বাজারে তাদের খাবারের দাম। নূন্যতম দামেই পাওয়া যায় মিষ্টি এবং অন্যান্য খাবার। পোস্ত প্যারা, মালাই চমচম, মৌচাক, ছানার বরফি, রসমালাইয়ের মতো বিভিন্ন সুস্বাদু মিষ্টি দামের দিক থেকে খুবই সহজলভ্য। মিষ্টি দইয়ের পাশাপাশি টক দইও খুবই জনপ্রিয়।
মিষ্টি এবং জলখাবার ছাড়াও তাদের রয়েছে নিজস্ব বেকারী শপ। ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মিষ্টির স্বাদ খুব সহজেই তাদের কাছে পাওয়া যাবে। ঈদ এবং শবেবরাতে এই মিষ্টির চাহিদা আরও বেড়ে যায়। ঈদের দিন শুধু মিষ্টি বা হালুয়া নয়, এই অপূর্ব পরোটার স্বাদ নিতেও ভিড় জমায় প্রচুর মানুষ। আরও শত বছর ধরে রমরমিয়ে চলুক ঐতিহ্যবাহী এই দোকান। বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা তৎপর থেকে যাক।
Discussion about this post