ইতিহাসে ঠাসা তিলোত্তমা কলকাতা শহর। উত্তর থেকে দক্ষিণ বিভিন্ন জায়গার বিভিন্নরকম গল্প, বিভিন্ন সংস্কৃতি, বিভিন্ন মানুষ। আর খাবারও যে একরকম হবে তা নিশ্চয়ই নয়! বিভিন্ন জায়গার চরিত্র অনুযায়ী খাবারের রকমও ভিন্ন ভিন্ন। কোথাও ভালো কচুরি-আলুর দম মেলে, তো কোথাও ভালো চাইনিজ; আবার কোথাও ভালো মাংস মিলল, তো কোথাও ভালো চা। কলকাতা শহরের গল্প ফুরোলেও ফুরোবেনা কলকাতার স্ট্রিট ফুডের সম্ভার। ফলে, চরৈবেতি! স্ট্রিট ফুডের মধ্যেও পুষ্টিকর আর লোভনীয় খাবারের আস্বাদ যুগ যুগ ধরে দিয়ে চলেছে চিত্তবাবুর দোকান।
কলকাতাই সম্ভবত এমন এক জায়গা, যেখানে ৩০-৪০ টাকায় ভরপেট খাওয়া যায়। আর আপনি যদি ধর্মতলা পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যান কলকাতার বিখ্যাত অফিস পাড়ায়, তবে তো কথাই নেই। একের পর এক অতি প্রাচীন ঘুপচি দোকানে বিভিন্ন খাবারের রূপ-রস-গন্ধে আপনার মন ভুলতে বাধ্য। তেমনই প্রাচীন, ঘুপচি অথচ রমরমিয়ে চলা খাবারের দোকান হল চিত্তবাবুর দোকান। সারা কলকাতার মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন খাবারের দোকানগুলির মধ্যে একটি ধরা হয় এই চিত্তবাবুর দোকানকে।
৭৭ বছরেরও বেশি দোকানের বয়স। ১৯৪৭ সালে এই দোকান খুলেছিলেন শ্রীশ রঞ্জন রায়। ডেকার্স লেনের ভিতরেই কয়েকটি কাঠের বেঞ্চি পাতা দোকানের সামনে। আর একটা পুরনো সাইন বোর্ড। চিত্তবাবুর দোকানের মাখন পাউরুটি সহযোগে চিকেন স্টু হল বিখ্যাত। এছাড়াও, এখানে পাওয়া যায় চা থেকে শুরু করে টোস্ট, ডিমের ডেভিল, ফিসরোল, চপ, পকোড়া, কবিরাজি সমস্তই। মাত্র পঞ্চাশ টাকা সেলামিতে কেনা এই দোকান একসময় অফিসবাবুদের প্রিয় দোকান ছিল। এখন অফিস ফেরত বাঙালি ছাড়াও অন্যান্য মানুষও খাবারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
Discussion about this post