বাঙালির পুজো মানেই দুর্গা পুজো। দুর্গা পুজো ছাড়া বাঙালি অসম্পূর্ণ। এই দুর্গাপুজো শুরু হয় মহালয়ায় দেবীর আগমনী সঙ্গীত দিয়ে। আর মহালয়া মানেই ১৯৩১ সাল থেকে আমাদের সকলের চেনা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর। মহিষাসুরমর্দিনী। এটি শুরু হয় রেডিওতে। এই অনুষ্ঠানের সদস্যরা হলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, রায়চাঁদ বড়াল, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য। রেডিওর যুগ বদলে বাঙালি দূরদর্শনের স্বাদ পেল। তখন শুরু হল কলকাতা দূরদর্শনের ‘দনুজদলনী দুর্গা’। আর দূরদর্শনের সেই সময়কাল থেকে যিনি আমাদের দুর্গা, তিনি হলেন সংযুক্তা ব্যানার্জী।
১৯৯৪ সালে দূরদর্শনে মহিষাসুরমর্দিনীর সম্প্রচার শুরু হয় সনৎ মাহান্তের পরিচালনা এবং শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্তের প্রযোজনায়। পর্দায় দেবী দুর্গা এবং তাঁর বিভিন্ন অবতার নিয়ে অভিনয় করেন সংযুক্তা ব্যানার্জী। সম্প্রচারের আগে চলে রিহার্সাল। সংযুক্তা ছিলেন শ্রী শিক্ষায়তনের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সেই সময় তাঁকে বেছে নেওয়া হয় এই চরিত্রের জন্য। আর তখন থেকেই পর্দায় বাঙালির দুর্গা মানেই সংযুক্তা। তাঁকে ছাড়া যেন মহালয়ার উৎসব সম্পূর্ণ হয় না। সংযুক্তা ব্যানার্জীর নৃত্যের প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা। তিনি বর্তমানে কানাডায় থাকেন এবং নাচ শেখান।
যুগ বদলেছে। অ্যানিমেশন ও ভিএফএক্সের যুগে হারিয়ে গিয়েছে আমাদের আসল মহালয়া। গোটা বাঙালি জাতির কাছে সংযুক্তা মানেই দেবী দুর্গার সেই স্নিগ্ধ মুখ, মমতা, শক্তি এবং তেজ। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র আর সংযুক্তা আমাদের ছেলেবেলার কথা যেন বারবার মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় বাঙালির ঐতিহ্যের কথা। দুর্গা দেবীর আগমনের কথা। সেই মহিষাসুরকে বধ করার কথা।
Discussion about this post