এক কাপ চা দিয়েই প্রতিদিনের সকালটা শুরু হয় আপামর ভারতবাসীর। আর সেই চায়ের সাথে ভারতবাসীর যেটা লাগবে সেটা হলো বিস্কুট। সকালের জলখাবার থেকে বিকেলের আড্ডা কিংবা মাঝরাস্তায় হালকা খিদে, ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের প্রথমেই যে নামটা মাথায় আসে তা হলো বিস্কুট। কিন্তু সঠিক দামে মনের মত স্বাদের বিস্কুট আজ খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। আর ঠিক এই জায়গাতেই স্বাদ, মান এবং সাশ্রয় — একসঙ্গে মিলিয়ে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে Sakambari Processors Pvt. Ltd নিয়ে এসেছে তাদের নতুন বিস্কুট ব্র্যান্ড Tasty Titbits। আর সেই ব্র্যান্ডের লক্ষ্য, পরিকল্পনা ও বাজার কৌশল নিয়ে ডেইলি নিউজ রিলের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় অংশ নিলেন সংস্থার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, কৌশিক নাগ। তাহলে চলুন তার কাছ থেকে জেনে নিই এই Tasty Titbits কোম্পানির ব্যাপারে আরো কিছু।
প্রশ্ন – বিস্কুট বাজারে প্রতিযোগিতা তীব্র — ব্রিটানিয়া ও পারলের মতো প্যান–ইন্ডিয়া ব্র্যান্ড যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনই রয়েছে একাধিক আঞ্চলিক সংস্থা। তাহলে বাজারের এই ভিড়ে Tasty Titbits নিজেদের কোথায় এবং কীভাবে দেখতে চায়?
কৌশিক নাগ – বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিতে দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় — কোয়ালিটি ও দাম। ব্রিটানিয়া বা পারলের মতো সংস্থা কোয়ালিটিতে ভালো, তবে তাদের পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। বিপরীতে পূর্ব ভারতে যে আঞ্চলিক ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে — যেমন বিস্ক ফার্ম, সোবিষ্কো, রাজা, সোনা বিস্কুট বা ভগবতী — এরা তুলনামূলক সস্তায় পণ্য দেয়, কিন্তু কোয়ালিটি সেই মানের নয়। আর ঠিক এই ফাঁকটাকেই পাখির চোখ করেছে Tasty Titbits। নবীন সংস্থা হলেও কোয়ালিটির ক্ষেত্রে নিজেদের ক্রমাগত উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করছে আমাদের ব্র্যান্ড। আমাদের বিশ্বাস — ভালো মানের বিস্কুট দেওয়ার জন্য দাম বাড়ানোটা বাধ্যতামূলক নয়। কম দামে ভালো মানের বিস্কুট পৌঁছে দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য, আর এটাই আমাদের বাজারে আলাদা করে তুলবে।
প্রশ্ন – বিস্কুটের কোম্পানির ক্ষেত্রে বিস্কুটের ভ্যারাইটিও একটা বিশাল বড় ফ্যাক্টর। Tasty Titbits কোম্পানি কত রকমের বিস্কুট নিয়ে এসেছে বাজারে আর সেগুলোর প্রাইস রেঞ্জটাই বা কি রকম?
কৌশিক নাগ – বর্তমানে Tasty Titbits–এর বাজারে রয়েছে মোট আট রকমের বিস্কুট — অরেঞ্জ ক্রিম, চকলেট ক্রিম, রাস্ক বা টোস্ট বিস্কুট, বাটার বিস্কুট, গ্লুকোজ বিস্কুট, মারী, টপ এবং মিষ্টি-নোনতা বিস্কুট। আর আমাদের প্রাইস রেঞ্জ শুরু হচ্ছে মাত্র ৫ টাকা থেকে। ৫ টাকার প্যাক আমরা রেখেছি পথচলতি সাধারণ মানুষের হালকা খিদে মেটানোর জন্য। কারো যদি হঠাৎ করে খিদে পায়, কিন্তু সেই সময় কাছে বেশি টাকা নেই খরচ করার মতো, তাহলে সে ৫ টাকার একটা বিস্কুটের প্যাকেট কিনেও নিজের খিদে মিটিয়ে নিতে পারবে। এছাড়াও, রয়েছে একটি ১০ টাকার প্যাকেট এবং একটি ফ্যমিলি প্যাক যার দাম ৩০ টাকা।
প্রশ্ন – যেকোনো FMCG মার্কেটে একটা বড় কোম্পানি হয়ে উঠতে গেলে, ব্র্যান্ড ভিসিবিলিটিও খুবই প্রয়োজন। বিস্কুটের মার্কেটও তার বিকল্প নয়। আপনার বিস্কুট কতগুলো দোকানে পৌঁছালো, কতজন মানুষের কাছে একটা বিস্কুট ডিসপ্লে হলো, সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আর সেই সূত্রেই তৃতীয় প্রশ্ন, Tasty Titbits কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটারশীপ চেন কতটা শক্তিশালী?
কৌশিক নাগ – এই মুহূর্তে আমরা সবে সবে শুরু করেছি। ফলত, প্যান–ইন্ডিয়া ভিসিবিলিটি এখনও তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। তবে, আমরা আপাতত আঞ্চলিক মার্কেটে আস্তে আস্তে নিজেদের ভিত শক্ত করতে শুরু করেছি। আমরা আমাদের সাপ্লাই প্রাথমিকভাবে পাঠাচ্ছি সুপার স্টকিস্টদের কাছে। সেখান থেকে তারা আমাদের বিস্কুট পাঠিয়ে দিচ্ছে ডিস্ট্রিবিউটারদের কাছে। সেই ডিস্ট্রিবিউটাররা বিভিন্ন রিটেইল চেনে আমাদের বিস্কুট সাপ্লাই করছেন। সুপার স্টকিস্ট এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত ধাপগুলোতে আমরা কিছুটা নিজেদের ইনপুট দিতে পারি। তবে, এরপর ডিস্ট্রিবিউটার থেকে দোকান অবধি আমাদের বিস্কুট কিভাবে পৌঁছাচ্ছে, সেটা আমাদের হাতে নেই। এটা পুরোপুরি ডিস্ট্রিবিউটরদের হাতে।
আর যদি ডিস্ট্রিবিউটরদের ব্যাপারে বলতে হয়, এই মুহূর্তে আমাদের উত্তর ২৪ পরগনায় রয়েছেন একজন ডিস্ট্রিবিউটর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একজন, উত্তর কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতায় রয়েছে একজন করে ডিস্ট্রিবিউটর। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে রয়েছেন ২ জন, দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলার দিকটা দেখছেন একজন, আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে রয়েছেন সর্বমোট তিনজন ডিস্ট্রিবিউটর, ঝাড়খন্ডে রয়েছেন দুজন, বিহারে রয়েছেন দুজন এবং উড়িষ্যায় রয়েছেন দুজন ডিস্ট্রিবিউটর। আমরা এই মুহূর্তে পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতের দিকেই নজর দিয়েছি এবং আমাদের ভবিষ্যতে আমাদের কোম্পানিকে প্যান ইন্ডিয়া কোম্পানিতে পরিণত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
চায়ের সঙ্গে বিস্কুট — ভারতীয় জীবনের দৈনন্দিন সঙ্গী। সেই জায়গাটিকেই কেন্দ্র করে কম দামে ভালো মানের বিস্কুট পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা করেছে Tasty Titbits। বাজারের প্রতিযোগিতা তীব্র হলেও তাদের আত্মবিশ্বাস অটুট — কোয়ালিটিতে আপস নয়, অথচ দামেও বাড়াবাড়ি নয়। এখন এবারে দেখার, বিস্কুটের জমজমাট বাজারে এই ব্র্যান্ডটি কত দ্রুত এবং কত ভালোভাবে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে পারে।






































Discussion about this post