বছরের শেষলগ্ন। উষ্ণতার পারদ ক্রমশ: নেমেই চলেছে। গায়ে চাদর জড়িয়ে রোদ পোহানোর দিন এসে গিয়েছে। যদিও বাঙালির কাছে এসব ছাপিয়ে বরাবরই থাকে এক হুজুগে উদ্দীপনা, উৎসবী মেজাজ। পৌষ সংক্রান্তির পিঠেপুলি হোক বা বড়দিনের কেক। বাঙালির আবেগের কাছে শীতের কাঁপুনি হার মানে বারবার। বিদেশী জাতির সান্নিধ্যেই একসময় বাংলায় কেকের আবির্ভাব ঘটে। কিন্তু বিদেশীরা বিদায় নিলেও, রয়ে গেছে বিদেশী সেইসব ঐতিহ্য। যার অন্যতম হল কেক। আর কেকের কথা এলেই, মাথায় চলে আসে নিউ মার্কেট, যেখানে ক্যাথলিন কিংবা নাহুমের কেকের সম্ভার সাজিয়ে বসে রয়েছে। কিন্তু বাংলা বেকারির কদর কতটা আজকের দিনে? ব্রিটিশ আমলেই এই চত্ত্বরে গড়ে উঠেছিল এক বেকারি। তবে চলুন, শহরের বুকে টিকে থাকা এমনই এক বাঙালির বেকারির গল্প শোনাই।
পাঁচ প্রজন্মের বাংলার এক কেক দোকান মল্লিক কনফেকশনার্স। হগ মার্কেটে যুগের পর যুগ ধরে রমরমিয়ে ব্যবসা করে আসছে। নাহুমসের কেকের সঙ্গে আজও তাল মিলিয়ে চলেছে সে। মল্লিকের কেকের স্বাদও একই রকম রয়ে গিয়েছে। ১৮৭৪ সালে জন্ম, এক কথায় ১৪৬ নট আউট এই বেকারির কেকের স্বাদেই বাঙালি মজে থাকে সারাটা বছর। তাকের উপর স্তরে স্তরে সাজানো কেকের ডালি। চোখ গেলেই মন ভরে ওঠার মতো এক দৃশ্য। মাত্র ৮০ থেকে ২৭০ টাকার যাবতীয় কেকের সম্ভার। নানারকম বিস্কুট, ক্রিম রোল, কুকিজ, প্যাটিস বা পাফের রকমারি আয়োজন। কম দামে ভালো স্বাদ পেতে একবার অন্তত ঢুঁ মারতেই হয় এখানে। সারাবছর কেকের চাহিদা বেশ ভালো। আর বড়দিনের আগে পা ফেলার জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে।
সারা কলকাতা জুড়ে সারাবছর ছোট বড় সব দোকানেই কেকের পসরা সাজানোই থাকে। আর আসন্ন ক্রিসমাসের সময় চাহিদা বাড়ে বহুগুণ। আর ঐতিহ্যের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে চলেছে মল্লিক কনফেকশনার্সের মতো আদি কলকাতার বেকারিরা। তাই আর দেরি নয়। বড়দিনের আনন্দে মেতে উঠুন বন্ধু-আত্মীয়-পরিবারের সাথে। কেক খান, কেক খাওয়ান। আর মহামারির বছর শেষে দিন কাটুক এক নতুন বছরের শুরুর প্রতীক্ষায়।
Discussion about this post