হালকা সাজ হোক বা কোনো অনুষ্ঠান বাড়ির সাজ–সব ক্ষেত্রেই মেয়েদের একটা জিনিস থাকবেই থাকবে। আর সেটা হল লিপস্টিক। কোথাও বেরোনো হলে চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক–এই দুই জিনিসের জুড়ি মেলা ভার। নিজের গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই বেশ কয়েকটা লিপস্টিক ব্যাগে তাদের থাকতেই হবে। এক কথায় বলতে গেলে লিপস্টিক মেয়েদের কাছে শুধু একটা প্রসাধন সামগ্রী নয়, যেন একটা আবেগের নাম। কারণ ছোটোবেলায় যখন উচ্চারণটাও ঠিকভাবে হত না তখন থেকেই মায়ের লিপস্টিক গুলো নিয়ে ঠোঁটে কারুকার্য করার স্মৃতি কমবেশি সব মেয়েদেরই রয়েছে বলা যায়।
তবে এই লিপস্টিক কিন্তু শুরু থেকেই মেয়েদের সাজার জিনিস হিসেবে প্রচলিত ছিল বললে ভুল বলা হবে। বরং একটা সময় পুরুষরাও ব্যবহার করত এই প্রসাধন সামগ্রী। না, তবে একেবারেই সাজার জন্য নয়। পুরুষদের ব্যবহার করার পিছনে ছিল বেশ অন্যরকম একটি কারণ। জড়িয়ে রয়েছে বহু বছরের ইতিহাস – ঐতিহ্য। প্রাচীন কালে এই লিপস্টিকই ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। তবে তা প্রাচীন রোম ও ইজিপ্টের মত দেশে। এখানে নিজেদের আভিজাত্য বা সমাজে তাদের স্থান বোঝাবার জন্য লিপস্টিক ব্যবহার করতেন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই। তখন উভয়ই খুব গাঢ় করে লিপস্টিকে রঙিন করে তুলতেন তাদের ঠোঁট। সেসময় অবশ্য এখনকার মত এত রঙ-বেরঙের শেড ছিল না, প্রচলিত ছিল বেগুনি,লাল ও কালোর মত গাঢ় রঙগুলোই।
এখন কথা হচ্ছে এখনকার মত আধুনিক পদ্ধতিতেই কী তৈরি হত আগেকার দিনের লিপস্টিক? আজ্ঞে না, একেবারেই তা নয়। বিস্তর ফারাকও রয়েছে। আগেকার দিনে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জিনিস দিয়ে যেমন আঠার সঙ্গে জাম জাতীয় ফল, লাল সীসা, বিভিন্ন গাছের ছাল, পোড়া মাটি, বিভিন্ন পোকা মাকড় কিংবা খনিজ উপাদান ব্যবহৃত হত লিপস্টিককে ঠোঁটে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য। মিশরীয়রা লিপস্টিককে গাঢ় করার আশায় এর সঙ্গে সীসাসহ আরও কিছু ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করতেন যার ফল খুব একটা সুখকর ছিল না মোটেই। তবে এখনকার উন্নত উপায়ে তৈরি লিপস্টিকগুলো আপনার ঠোঁটকে অনেক বেশি সুন্দর করে তোলে ও আপনাকেও করে তোলে আত্মবিশ্বাসী। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ব্যাগের বেশ বড় একটা জায়গা ঘিরে রয়েছে নামীদামী ব্র্যান্ডের সব লিপস্টিক।
চিত্র ঋণ – The Recipe Project
Discussion about this post