শহর হোক বা গ্রাম, এক কথায় বলতে গেলে গোটা পরিবেশই আজ দূষণের শিকার। বিপন্ন অরণ্য ভূমি। তবে এই সময়ে দাঁড়িয়েই এক নতুন চিন্তার খোঁজ মিললো রায়গঞ্জ বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ তাপস পালের দৌলতে। বরাবরই তার নাম উঠে আসে নতুন নতুন কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে। আর এবার তার নতুন ভাবনা ‘বিবাহ বৃক্ষ’। পরিবেশ রক্ষার তাগিদে এই কর্মসূচি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। গত বুধবার উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের মহজমবাড়ি গ্রামে পাত্র বিকাশ ভৌমিক ও পাত্রী পম্পা ভৌমিকের বিয়েতে এই অভিনব পদ্ধতিতে উপহার দেওয়া হল।
ডেইলি নিউজ রিলের সঙ্গে কথোপকথনে সেই অধ্যাপক জানালেন বেশ কিছু তথ্য। বিবাহ বৃক্ষ’ অর্থাৎ বিবাহের মধ্যে দিয়ে যেমন সম্পর্ক বেঁচে থাকে, ঠিক তেমনই গোটা উদ্ভিদ জগৎ বাঁচিয়ে রাখে পৃথিবীকে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে স্থিতিশীল চিন্তার বীজ বোনা, এমনটাই জানিয়েছেন রায়গঞ্জ বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ তাপস পাল। তাই অধ্যাপকের সম্পূর্ণ নিজস্ব ভাবনা ‘বিবাহ বৃক্ষ’।
বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতে গিয়ে উপহার স্বরূপ তিনি তুলে দেন দুটি গাছ। মানুষের মনে চিন্তার সঞ্চারণে আবেগের চেয়ে বড় কিছুই হয় না। এ কর্মদ্যোগ তার হলেও, এতে উদ্বুদ্ধ তাঁর সহকর্মী এবং গবেষকরাও। তাঁরা এই চিন্তাকে সম্মান জানিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছে ‘বিবাহ বৃক্ষ’ নামক কর্মকান্ডটি। এরই মধ্যে সাতটি বিয়ে বাড়িতে উপহার হিসেবে পৌঁছে গিয়েছে বিবাহ বৃক্ষ। তবে তাদের লক্ষ্য এক হাজারটি ‘বিবাহ বৃক্ষ’ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। গ্রাম্য এলাকায় তারা পৌঁছে দেন আউটডোর প্ল্যান্টস, আর নগরবাসীদের কাছে পৌঁছে দেন ইনডোর প্ল্যান্টস (জেট প্ল্যান্ট বা মানি প্ল্যান্ট) যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অনেকটাই লাঘব করতে সাহায্য করে।
এতে যেমন পরিবেশের সৌন্দর্য বাড়ে, পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। ডঃ তাপস পালের মতে, ‘গ্রীন মাইন্ড’ বা সবুজ মন তৈরি করতে হবে। চারিদিকে বাড়াতে হবে সবুজ উদ্ভিদের পরিমাণ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই বার্তাই দিয়েছেন অধ্যাপক। আরও অনেক অন্যরকম প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সম্প্রতি নজির গড়েছে ‘বিবাহ বৃক্ষ’। সবুজ চিন্তাই,যে আসলে সুস্থ চিন্তা। পৃথিবীকে কিছু দিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব তো আসলে আমাদের সবারই।
Discussion about this post