একটি নিরীহ, অবলা সারমেয়র উপর বিগত বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল যৌন নির্যাতন। নির্যাতন চালাচ্ছিল মধ্যবয়স্ক এক প্রৌঢ়। ভিডিও ফুটেজ হাতে আসতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। আতঁকে ওঠার মতো এই ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার অন্তর্গত রাজপুরের চৌহাটি পোস্ট অফিসের পেয়ারাবাগান অঞ্চলে। ধর্ষকের নাম রতিকান্ত সরকার ওরফে ক্যাবলা সরকার। কলকাতা অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশন, যা কেএডব্লিউআইএফ নামেও পরিচিতের তৎপরতায় এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত রতিকান্ত ওই সারমেয়টির ওপর এই অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা বিজন মজুমদার এর হাতে অভিযুক্তর ধর্ষণরত একটি ভিডিও আসায় তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার পশুপ্রেমী সন্দীপন মুখার্জির সাথে যোগাযোগ করেন।
গত ২৯ মার্চ, স্থানীয় সময় দুপুর ৩টে থেকে সাড়ে তিনটের মধ্যে অভিযুক্তকে তাঁর বাড়িতে যৌন অত্যাচারে লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার সাথে সাথে ৩০ মার্চ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দীপন ও তাঁর সহকর্মীরা সারমেয়টিকে উদ্ধার করেন। ঐ দিনই রাত ১২:৩০ নাগাদ ওই প্রতিষ্ঠানের তরফে সোনারপুর থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণ ও সেকশন ১১ – প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েল্টি টু অ্যানিমালস অ্যাক্ট, ১৯৬০ অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করা হয় এবং দ্রুত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পৌঁছনোর আর্জি জানানো হয়।
উদ্ধার হওয়া সারমেয়টির মেডিক্যাল পরীক্ষার পর সে বর্তমানে স্থানীয় এক পরিবারের সাথে রয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুটা ভয়ার্ত সারমেয়টি শারীরিকভাবে সুস্থ আছে। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সন্দীপন মুখার্জী বলেন, “এরকম বিকৃত মানসিকতার লোক সমাজ ও সমাজে বসবাসকারী মানুষসহ অন্যান্য জীবের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। এদেরকে দ্রুত ও কঠোর শাস্তি না দিতে পারলে বারবার এরকম ঘটনার স্বীকার হতে হবে এই সারমেয়টির মতো অন্য অবলা জীবদেরও।” তিনি এও জানান, তার দেখা এরকম ঘটনা কলকাতায় এই নিয়ে চতুর্থবার।
অন্যান্য তিন বারও একই ভাবে অভুযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নিতে এগিয়ে গেছেন সন্দীপন ও তাঁর প্রতিষ্ঠান। ডেইলি নিউজ রিলের তরফে আগেও তুলে ধরা হয়েছে সেই ঘটনা প্রবাহ। কলকাতায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রমাণের অভাবে ও রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে কী হয় এখন সেটাই দেখার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণ একটি যামিন অযোগ্য ধারা। ৩৭৭ ধারা ও সেকশন ১১ – প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েল্টি টু অ্যানিমালস অ্যাক্টের সর্বোচ্চ শাস্তি যথাক্রমে দশ বছর অবধি জেল ও জরিমানা।
Discussion about this post