কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মধ্যে বুড়িমা এক অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় জগদ্ধাত্রী পুজো। জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস খুব একটা প্রাচীন নয়। অতীতের কিছু ব্রাহ্মণ ঘর ছাড়া বাংলায় জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন তেমন ছিল না। অষ্টদশ শতকে নদীয়ায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো প্রচলন করেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পুজো জনপ্রিয়তা। আজ ছোট বড় মিলিয়ে কৃষ্ণনগরে প্রায় সাড়ে তিনশোর ওপর জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। তার মধ্যে বুড়িমার জনপ্রিয়তা যে সবথেকে বেশি তার জন্য কোনও বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন নেই।
১৭৭২ সালে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীর দেখাদেখি কৃষ্ণনগরের চাষাপাড়ায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রজারা এই পূজো শুরু করেছিলেন। প্রথম প্রথম বাড়তে থাকে হতো ঘটে এবং পটে। স্থানীয় গোয়ালারা দুধ বিক্রি করে পুজোর আয়োজন করতো। ১৭৯০ সালে গোবিন্দ ঘোষ নামে এক স্থানীয় গোয়ালা ঘট ও পটের পরিবর্তে প্রতিমা রূপে দেবী আরাধনা শুরু করেন।
এই প্রতিমার বৈশিষ্ট্য হলো প্রায় সাড়ে সাতশো ভরি সোনার গয়নায় দেবীর অলঙ্কার সজ্জা এবং প্রতি বছর এই সোনার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। দূর দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ এসে ভিড় জমান প্রতিমা দর্শনে। কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে এই দেবী খুবই জাগ্রত। খুব একটা আহামরি প্যান্ডেল না হলেও এখানে সব সময়ই ভিড় থাকে, সে রাত দুটো হোক কিংবা দুপুর বারোটা। কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে আবেগের আরেক নাম বুড়িমা।
Discussion about this post