বাঙালি বড়ই পিঠেবিলাসী। বাঙালিদের কাছে শীত তথা পৌষ মাস মানেই পিঠের মরশুম। এই সময় পিঠে পুলি ছাড়া চলে নাকি! প্রতি বাঙালি ঘরের হেঁশেলে যেন রকমারি সব পিঠের রাজত্ব। আর এই পিঠের দোসর তো রয়েছেই – শীতকালের নলেন গুড়। পিঠে আর গুড়ের এই কেমিস্ট্রি বলে বলে হার মানাতে পারে লোভনীয় সব খাবার- দাবারকে। কিন্তু পিঠের দোসর কী কেবল গুড়ই হতে পারে? মাছ-মাংসও যদি জায়গা করে নেয় তাহলে ক্ষতি কী! ভাবছেন তো পিঠের সঙ্গে আবার মাছ মাংসের কম্বিনেশন? আজ্ঞে হ্যাঁ মশাই, বাংলাদেশের এরকমই জনপ্রিয় ও সুস্বাদু এক বাঙালি পিঠে হল খোলাজালি পিঠে। যা শুধুমাত্র গুড় দিয়েই নয়, মাছ মাংসের তরকারি দিয়েও বাঙালির কাছে অমৃতসম।
চালের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি খোলাজালি বা খোলাজা পিঠে হল নোয়াখালী অঞ্চলের এক ঐতিহ্যবাহী পিঠে। এটি এখন সবার কাছেই বেশ পছন্দের। বাংলাদেশের আরেক ঐতিহ্যবাহী চিতই পিঠের সঙ্গে এই পিঠের রূপে ও স্বাদে বেশ মিল রয়েছে। তাই অনেকেই এই পিঠেকে ‘পাতলা চিতই’ও বলেন। সাদা রঙের এই পিঠে দেখতে হয় গোলাকার, অসংখ্য ছোটো ছিদ্র বহুল। অনেকটা সেই দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় খাবার ধোসার মতই। তবে স্বাদ একেবারেই ভিন্নরকম। নরম তুলতুলে বা মচমচেও হয়।এই পিঠে তৈরি করা কিন্তু খুব সহজ। সময়ও লাগে খুব কম। উপকরণ বলতে কেবল চালের গুঁড়ো, স্বাদমতো নুন, ডিম, গরম জল আর পিঠেটি তৈরির জন্য মাটির খোলা। ব্যস এটুকুই! উপকরণের সঙ্গে পদ্ধতিটাও জানা হয়ে গেলে মন্দ হয় না, তাই না? জেনে নিন কীভাবে তৈরি হয় জনপ্রিয় এই খোলাজালি পিঠে।
চালের গুঁড়ো, নুন এবং জল মিশিয়ে মোটামুটি পাতলা গোলা তৈরি করে নিন। এবার তাতে ডিম ভেঙে দিন। ডিমটা খুব বেশি না মিশিয়ে হালকা হাতে নেড়ে গোলার সঙ্গে মিশিয়ে তা ঢেকে রাখুন। এবার মাটির খোলা গরম হতে দিন। গরম হলে তাতে গোল চামচের সাহায্যে গোলা দিয়ে ঘুরিয়ে গোলাটি ছড়িয়ে দিন। এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন মাত্র ৩০ সেকেন্ডের জন্য। ততক্ষণে পিঠের চারপাশ আলগা হয়ে উঠতে শুরু করবে। খুন্তির সাহায্যে এবার সেটি তুলে নিন। ঠিক এভাবে সবগুলো পিঠে তৈরি করে মাংসের ঝোল কিংবা নলেন গুড়ের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
Discussion about this post